চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের প্রথম টেস্টের ফল কি হবে, সেটি তৃতীয় দিনেই মোটামুটি আন্দাজ করা গিয়েছিল। অলৌকিক কিছু ঘটেনি, সফরকারী টাইগাররা ভারতের কাছে হেরেছে ২৮০ রানের বড় ব্যবধানে। বাংলাদেশের ব্যাটিংকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট শিকার করেছেন অভিজ্ঞ স্বাগতিক অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এর মাধ্যমে বেশ কয়েকটি রেকর্ডে তিনি নিজের নাম তুলেছেন।
ম্যাচের তৃতীয় দিনেই ৩৮ বছর বয়সী এই অফস্পিনার নেন ৩ উইকেট, আজ (রোববার) নিয়েছেন আরও ৩ উইকেট। পাঁচ উইকেট পূর্ণ করার মধ্য দিয়ে তিনি ভেঙে দিয়েছেন নাথান লায়নের একটি রেকর্ড। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে এতদিন যৌথভাবে সর্বোচ্চ ফাইফারের রেকর্ড ছিল লায়ন ও অশ্বিনের। আজ এই ভারতীয় তারকা ১১তম ফাইফার নিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেন।
ভারতের ৫১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জেতা একপ্রকার অসম্ভব ছিল বাংলাদেশের জন্য। ম্যাচের তৃতীয়দিন উইকেটের শুরুটা জাসপ্রিত বুমরাহ করলেও, পরের গল্পটা অশ্বিনের দখলে। একে একে তিনি বিদায় করেন সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমকে। আজ ভারতের জয় নিশ্চিত করার দিনেও তিনি সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের উইকেট নেন। মিরাজের উইকেট নিয়েই বেশ একাধিক রেকর্ড গড়ে ফেলেন অশ্বিন। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৮৮/৬।
এর আগে প্রথম ইনিংসে অশ্বিন মূল ভূমিকা পালন করেন ব্যাটিংয়ে। উইকেটশূন্য থাকলেও, ব্যাট হাতে খেলেন ১১৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে তার ১৯৯ রানের জুটিই মূলত ভারতকে ১৪৪/৬ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি জোগায়। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামার প্রয়োজন হয়নি টেষ্টে ৬টি সেঞ্চুরি হাঁকানো অশ্বিনের। তবে নিজের চেনা ছন্দে নিয়েছেন ৬ উইকেট। এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফাইফারের দিক থেকেও তিনি রেকর্ড গড়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ টেস্টে সেঞ্চুরি-ফাইফারের কীর্তি গড়েন অশ্বিন।
তারচেয়ে বেশি এক (৫) টেস্টে ওই রেকর্ড আছে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ইয়ান বোথামের। এ ছাড়া এক টেস্টে সর্বোচ্চ ২ বার করে সেঞ্চুরি ও ফাইফারের রেকর্ড রয়েছে পাঁচজনের। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ছাড়া বাকিরা হলেন– গ্যারি সোবার্স, মুশতাক মোহাম্মদ, জ্যাক ক্যালিস ও রবীন্দ্র জাদেজা।
টেস্টে সর্বোচ্চ ফাইফারের দিক থেকেও যৌথভাবে দুইয়ে আছেন অশ্বিন। তার সমান ৩৭ বার পাঁচ উইকেট শিকারের রেকর্ড আছে অষ্ট্রেলিয়ান গ্রেট শেন ওয়ার্নের। ৬৭ বার ফাইফার নিয়ে টেস্টে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের রিচার্ড হ্যাডলি ৩৬ এবং আরেক ভারতীয় অনিল কুম্বলে ৩৫ বার টেস্টে ফাইফার নিয়েছেন।
টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার দিক থেকে অশ্বিন আজ ছাড়িয়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মহারথি কোর্টনি ওয়ালশকে। তার সমান ৫১৯ উইকেট নিয়ে গতকাল যৌথভাবে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় অষ্টম স্থানে ছিলেন এই ভারতীয়। আজ উইকেটসংখ্যাকে নিয়ে গেলেন ৫২২–এ। এক্ষেত্রেও টেস্টে সর্বোচ্চ ৮০০ উইকেট নিয়ে সবার শীর্ষে আছেন মুরালিধরন। তার পর যথাক্রমে আছেন– ওয়ার্ন (৭০৮), জেমস অ্যান্ডারসন (৭০৪), কুম্বলে (৬১৯), স্টুয়ার্ট ব্রড (৬০৪), গ্লেন ম্যাকগ্রা (৫৬৩) ও নাথান লায়ন (৫৩০)।