নিজেদের চাহিদা মেটাতে ভারতের একাধিক কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ। তবে এসব কোম্পানিকে গত ৮ থেকে ৯ মাস ধরে কোনো বিল দিচ্ছে না ঢাকা। এতে করে বিল জমতে জমতে তা এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কিন্তু ডলারের সংকটে এখন বিল শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নথির তথ্য ও কয়েকটি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় কোম্পানিগুলো ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি যে বকেয়া পাবে সেটি দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। কিন্তু বকেয়া পরিশোধের জন্য যে ডলার প্রয়োজন সেটি যোগাড় করা যাচ্ছে না।
২০২২ সালে যখন ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয় তখন জ্বালানি এবং মালপত্রের দাম বৃদ্ধি পায়। ওই সময় থেকেই বাংলাদেশ আর বিল দিতে পারছিল না। জুলাই ও আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হয়েছে সেটির কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে।— বলেছে রয়টার্স।
সমস্যা সমাধান ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতি দূরীকরণে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ এখন জরুরিভিত্তিতে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা চাইছে। গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিল ঢাকা।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, “বকেয়া বিল পরিশোধের চেষ্টা চলছে। কিন্তু ডলার সংকট প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল করে দিচ্ছে।”
ভারতীয় কোম্পানিগুলো ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি যে অর্থ পাবে সেগুলোর মধ্যে আদানি পাওয়ার একাই পাবে ৮০০ মিলিয়ন ডলার।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী অপর দুই প্রতিষ্ঠান পিটিসি ইন্ডিয়া এবং এসইআইএল ইন্ডিয়া লিমিটেড বিপিডিবির কাছে যথাক্রমে ৮০ মিলিয়ন এবং ১৯০ মিলিয়ন বকেয়া বিলের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে। রয়টার্স এ সংক্রান্ত নথি পেয়েছে।
এই দুটি কোম্পানির কাছে বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ মিলিয়ন ডলারের ব্যাংক গ্যারান্টি রয়েছে। যদি দ্রুত বাংলাদেশ এসব অর্থ পরিশোধ না করে তাহলে তারা ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো নগদ অর্থে ভাঙিয়ে নিতে পারে।
এ মূহুর্তে রুপালি ব্যাংকের উপর ২৭০ মিলিয়ন ডলার যোগাড়ের দায়িত্ব পড়েছে বলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।