সেনাবাহিনীকে সবখানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া সমীচীন হবে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে সেসব এলাকায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের হলরুমে জেলা বিএনপি আয়োজিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সহায়তা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মানে অন্যরা কাজ করছে না। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা সেসব এলাকায় দেওয়া প্রয়োজন যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু যেসব এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই সমস্ত বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছেন, সেসব এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সমস্যা তৈরি করা সমীচীন ও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বিষয়টি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিবেচনা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনার সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ১৬ বছরে অনেক অন্যায়-জুলুমের শিকার হয়েছি ও ত্যাগ শিকার করছি। আমরা সবাই অনেক আশাবাদী হয়ে আছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারা জঞ্জালকে দূর করে দেশের এমন একটি পরিবশে তৈরি করবেন, যেখানে সুস্থ উপায়ে ও সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনে জনগণের একটি পার্লামেন্ট তৈরি করবেন।
‘সবদিক চিন্তা করে সামনে যেন সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ও পার্লামেন্ট হয়, আর যেন মানুষের প্রতি অন্যায় অত্যাচার না হয়। ছোট ছোট শিশুদের গুলি করে হত্যা করা না হয়, শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য যার যার সঙ্গে কথা বলা ও যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তাই করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ বলেন ফখরুল।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শেখ হাসিনার বিচার চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানের সঙ্গে। ২০২৪ সালে যুদ্ধ করতে হলো দেশের একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। ছাত্র আন্দোলনে ঠাকুরগাঁওয়ে চারজন শহীদ ও হাজারও মানুষ আহত হয়েছেন। স্বৈরাচার হাসিনার আমলে ২০১২ সাল থেকে আমাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সাত শর বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া তারেক রহমানসহ সাধারণ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিঃস্ব করা হয়েছে। তাদের আমলে ঠাকুরগাঁওয়ে নয়জনকে হত্যা করেছে।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বক্তব্য শেষে আন্দোলনে ঠাকুরগাঁওয়ের চারটি শহীদ পরিবার ও ২৯ আহত সদসদের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেন ফখরুল।
এ সময় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।