কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতির ওপর ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’ নামে একটি গান করেছিলেন র্যাপার হান্নান। প্রকাশের পরই তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে গানটি। এ গানের কারণে গ্রেফতার করা হয় হান্নানকে। টানা ১৩ দিন বন্দি ছিলেন কারাগারে। সংবাদমাধ্যমকে জানালেন সেই অভিজ্ঞতা।
হান্নান বলেন, ‘আদালতে নেওয়ার আগে থানায় ৩৯ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছিল। আমার পরিবারের লোকজন তখন কিছুই জানত না। আদালতে পাঠানোর আগেও আমি জানতাম না, আমাকে কী অভিযোগে এখানে আনা হয়েছে। পরে জেনেছি, আমার বিরুদ্ধে নাকি ভাঙচুর, বিস্ফোরণের মামলা দেওয়া হয়েছে। যখন আমাকে কারাগারে নিয়ে আসা হয় তখনই বুঝে গিয়েছিলাম এখানে আমাকে কিছুদিন থাকতে হবে। বাকি দিনগুলো খুব কষ্টে কাটবে।’
এরপর বলেন, ‘প্রথম কয়েকটা দিন ছিল খুবই দুঃসহ। আমাকে টাওয়ারে রাখা হয়েছিল। বাইরে বের হওয়ার উপায় ছিল না। পরে টাওয়ার থেকে নামিয়ে বাইরের সেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ছোট একটা রুমের মধ্যে আমার সঙ্গে দু’জন ছিল। জেলের ভেতর বাইরের কোনো খবর পাচ্ছিলাম না। প্রথম জেলজীবন। ১৩ দিন কতটা কষ্টে জেলে ছিলাম তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।’
জেল থেকে মুক্তির অনুভূতি জানিয়ে হান্নান বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর জেল থেকে বের হয়েছি তাই মনে অনেক বল ছিল। ভয়ডর উবে গিয়েছিল। মনে হলো মুক্ত দেশে পা রেখেছি। জেলে থাকালীন শিল্পীসহ নানা শ্রেণির মানুষ আমাকে মুক্ত করার জন্য কর্মসূচি নিয়েছিলেন। অনেকের আইনি সহায়তা পেয়েছি। অনেকে দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি করেছেন। কেউ কেউ ব্যানার নিয়ে মিছিলও করেছেন। সবাই আমার জন্য এত কিছু করেছেন আমি যখন জানতে পেরেছি, আবেগে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।’
গত ২৫ জুলাই গ্রাফতার করা হয় র্যাপার হান্নানকে। নেওয়া হয় রিমান্ডেও। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মেলে মুক্তি।
বলে রাখা ভালো ১৮ জুলাই ইউটিউবে ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’ গানটি প্রকাশ করেন হান্নান। নিজের ফেসবুকেও দেন শেয়ার। সঙ্গে লিখেছিলেন, আমরা কোনও সংস্থার বিরোধিতা করছি না। এর পরিবর্তে, আমরা আমাদের সমবয়সীদের কণ্ঠকে প্রসারিত করতে চাই এবং আমাদের দেশকে প্রভাবিত করে এমন সমস্যাগুলোর উপর আলোকপাত করতে চাই৷’