আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত পূরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সাত দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সংস্থাটির উচ্চপর্যায়ের একটি স্টাফ মিশন ঢাকা সফরে আসছে। ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিশনটি ঢাকায় অবস্থান করবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে আইএমএফের প্রতিশ্রুত ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের চতুর্থ কিস্তি বাংলাদেশকে ছাড় করা হবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের চাওয়া অতিরিক্ত ৩০০ কোটি ডলারের নতুন ঋণের মঞ্জুরির বিষয়টিও চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে থাকবে।
জানা গেছে, আইএমএফ থেকে ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের অনূকূলে ছাড় করার সময় চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার আগে ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারের সময়াবদ্ধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, নিম্ন রাজস্ব আয় এবং ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাব—এই চার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার লক্ষ্যে নতুন শর্তগুলো দেওয়া হয়। সফরে মূলত সেগুলোর অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হবে। আইএমএফের স্টাফ মিশন সেই মূল্যায়ন প্রতিবেদন পরে উপস্থাপন করে আইএমএফ বোর্ডের কাছে। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফ বোর্ডে বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণের চতুর্থ কিস্তির অনুমোদন পাবে।
এর আগে নীতিনির্ধারণী বার্তা পেয়ে সংস্থাটির বাংলাদেশ অফিস থেকে অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের কাছে ই–মেইল বার্তায় চলতি মাসের ২৪-৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই স্টাফ মিশনের ঢাকা সফরের আগ্রহের কথা জানানো হয়। ঢাকা অফিসের এমন অফিশিয়াল প্রস্তাব পাওয়ার পর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আলোচনা শেষে আইএমএফ সময়সূচিকেই অর্থ মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকা সফরে আইএমএফ স্টাফ মিশনে সর্বোচ্চ ১১ সদস্যের টিম থাকবে বলে জানানো হয়। কার নেতৃত্বে এবং টিমে কোন কোন সদস্য থাকবেন, সেটি শিগগিরই অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানাবে বলে জানিয়েছে আইএমএফের ঢাকা অফিস। আইএমএফ থেকে সফরের এই প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই স্টাফ মিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে সব বাংলাদেশি অংশীজন প্রতিষ্ঠানকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুতি সেরে রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আশা করছি, ডিসেম্বরে আগের ঋণের চতুর্থ কিস্তির পাশাপাশি নতুন প্রস্তাবিত অতিরিক্ত ৩০০ কোটি ডলারের ঋণও পাবে বাংলাদেশ।’