ভারতীয় ভিসা সেন্টারে কাল জাতীয় দলের পেসারদের পেয়েই একটা ছবি তুলে রেখেছেন ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খান। মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তানজিম সাকিব, খালেদ আহমেদ, নাহিদ রানা ও রিপন মণ্ডলকে নিয়ে তোলা ছবিটা ফেসবুকেও পোস্ট করেছেন আতহার। ছবিতে ছিলেন না শুধু তাসকিন আহমেদ।
আতহারের চোখে বাংলাদেশের এই পেস আক্রমণ ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’! তাঁর আশা, পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা যে ঝলক দেখিয়েছেন, ভারতেও সেটি ধরে রাখতে পারবেন হাসানরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স দেখেই ভারত গত পরশু চেন্নাই টেস্ট সামনে রেখে শক্তিশালী এক দল ঘোষণা করেছে। সেই দল দেখে পরশু দলের এক সিনিয়র ক্রিকেটার শুধু বললেন, ‘সিরিয়াস টিম!’
কাল আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘ওরা চার পেসার, চার স্পিনার রেখেছে স্কোয়াডে। আমাদের সংশয়ে রাখতেই এমন দল দিয়েছে। মনস্তাত্ত্বিক খেলা আরকি!’ ভারতীয় দলের একাদশ নিয়ে তাঁর অনুমান, ‘চেন্নাইয়ের উইকেট জানি না, ওরা কেমন তৈরি করবে। পেস বোলারদের মধ্যে বুমরা, সিরাজ—দুজনই খেলবে। হয়তো বাঁহাতিটাও (যশ দয়াল) খেলবে। আমার ধারণা, স্পিনারদের মধ্যে কুলদীপকে খেলাবে না। তবে জাদেজা-অশ্বিন খেলবে।’
চার ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ, যশ দয়ালের সঙ্গে চার স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব—এই স্কোয়াড থেকে চেন্নাইয়ের কন্ডিশনে ভারতীয় দলের একাদশে কে কে থাকছেন, অনুমান করা কঠিন হচ্ছে বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুরও। গতকাল তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘পেস ও স্পিনে খুব ভারসাম্যপূর্ণ দল দিয়েছে তারা। অনেক বৈচিত্র্য আছে। বলা তাই কঠিন (কেমন সমন্বয় হতে পারে)। সাধারণত তিন পেসার, তিন স্পিনার নিয়ে খেলতে পারে। দুইটা অলরাউন্ডার পেয়ে যাচ্ছে। জাদেজা খেলবে। অশ্বিন অবশ্যই খেলবে; যেহেতু আমাদের এতগুলো বাঁহাতি ব্যাটার। আবার তারা দুটি পেসারেও যেতে পারে। একটু ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ট্র্যাডিশন হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, ছয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের সঙ্গে পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলার—তাদের সেই বিলাসিতা দেখানোর সুযোগ আছে।’
কিছুটা ‘বিলাসী’ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন লিপুরাও। পেস বোলিং আক্রমণে এখন একাধিক বিকল্প তৈরি হয়েছে। লাল বলে তাসকিন, নাহিদ, হাসান, শরীফুলের সঙ্গে ফিট ইবাদতকেও পাবেন তাঁরা। যদিও ইবাদতকে এখনই টেস্ট খেলাচ্ছে না বাংলাদেশ। তবে ভারতে দলের সঙ্গে তিনি থাকবেন বলেই জানা গেছে। স্পিন আক্রমণে সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে তাইজুল ইসলাম তো আছেনই। টপ অর্ডারেও বেশ কয়েকটি বিকল্প তৈরি হয়েছে এখন। চোটে পড়া মাহমুদুল হাসান জয়ের জায়গায় সুযোগ পাওয়া সাদমান ইসলাম পাকিস্তানে দারুণ খেলেছেন। এখন জয়-সাদমান-জাকিরের মধ্যে দুজনকে বেছে নিতে হবে তাঁদের। বিদেশের মাঠে হতে যাওয়া একটা টেস্ট সিরিজের আগে এমন মধুর সমস্যা কিছুটা উপভোগই করছে বিসিবির নির্বাচক প্যানেল।
কাল লিপু বলছিলেন, ‘হ্যাঁ, এটা ঠিক, এবার আমাদের কিছুটা লাক্সারি আছে। যখন বেশির ভাগ খেলোয়াড় রান পায়, তখন যে রান পায় না, তাকে নিয়ে কথা হয় না। তখন সবার জন্যই একটা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি থাকে।’
তবু পাকিস্তানের বিপক্ষে স্কোয়াড থেকে ভারত সফরের বাংলাদেশ টেস্ট দলে একটি পরিবর্তন আসতে পারে বলেই আভাস। দল যেটাই হোক, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের অনুমোদন পেয়ে গেলে আজই দল ঘোষণা করে দিতে পারেন নির্বাচকেরা; সেটি না হলে কাল জানা যাবে ভারত সফরের টেস্ট দল।