জানা যায়, রাখাইন থেকে প্রথমে হেঁটে নাফ নদীর ওপারের তীরে আসে রোহিঙ্গারা। সেখানে নৌকা নিয়ে বসে থাকে দালালেরা। এপারে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তেও থাকে দালাল। রাতে তারা টাকা নিয়ে রোহিঙ্গাদের ঢুকিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশে।
উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, রাতের অন্ধকারে মংডু টাউনশিপের সুদাপাড়া, ফয়েজীপাড়া, সিকদারপাড়া ও নুরুল্লা পাড়া গ্রাম থেকে রোহিঙ্গারা নৌকা নিয়ে নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন। নাফ নদীর সীমান্তে কিছু দালাল চক্রের সদস্যরা আবারও নৌকায় করে রোহিঙ্গারা শাহ পরীর দ্বীপ, ঘোলার চর, জালিয়া পাড়া, সাবরাং, নয়া পাড়া, টেকনাফের জাদিমুড়া, নাইট্যংপাড়া, বড়ইতলি, কেরুনতলি ও বাহারছড়া ইউনিয়নের সাগর উপকূলের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নিয়ে দেশে আসছে।
উখিয়া পাংলাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ গফুর চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে না থাকার সুযোগে প্রতিদিন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। মূলত সীমান্তে কিছু দালাল জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশে ঢুকতে সহযোগিতা করছে। গত এক সপ্তাহে উখিয়া সীমান্ত দিয়ে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। উখিয়া পালংখালী সীমান্তে ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় আছে।
টেকনাফ সাবারাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, দিনে রোহিঙ্গারা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করেন। রাতে দালালের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। প্রতিদিন কমবেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নজির আহমদ বলেন, এক সপ্তাহে টেকনাফ সীমান্তে দিয়ে ৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে করেছে। কেরনতলি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমি শতাধিক রোহিঙ্গাকে আটক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, উখিয়া -টেকনাফের কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের খবর আমরা পেয়েছি। তবে এ পর্যন্ত কতজন ঢুকেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, গত কয়েক দিনে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের তথ্য আমরা পেয়েছি। বিজিবি ও কোস্ট গার্ডকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।