সরকার পতনের তৃতীয় দিনেও ‘ভয়ে’ অফিসে আসছেন না গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়-বিভাগের সচিবরা। তাদের অনুপস্থিতে অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনও দিক-নির্দেশনা পাচ্ছেন না। ফলে এসব মন্ত্রণালয়-বিভাগের কার্যক্রমে এক প্রকার স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। তার আমলের মন্ত্রিসভার সদস্যরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের বাড়ি। এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছেন সচিবরাও।
বুধবার (৭ জুলাই) সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের দপ্তরে গিয়ে দেখা যায়, তিনি নেই, তার কক্ষও বন্ধ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনপ্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা।
তার দপ্তরের কর্মচারীরা জানান, সরকার পতনের পর গত দুদিন তিনি সচিবালয়ে আসেননি। না আসার কারণও কর্মচারীরা জানেন না।
একই চিত্র দেখা যায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। এ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিনও দুদিন অফিস করছেন না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগে দুই সচিব। তাদের কাউকেই দপ্তরে পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম দুদিনই তার দপ্তরে অনুপস্থিত। আর সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান গতকাল অফিসে এলেও আজ আসেননি বলে জানিয়েছেন তার দপ্তরের কর্মচারীরা।
আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী দুদিন ধরে অফিস করছেন। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার এ দুদিন অফিস করছেন না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেনও এ দুদিন অফিস করছেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খলিলুর রহমান গতকাল অফিসে এলেও আজকে আসেননি।
সচিবালয়ে অবস্থিত একটি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, মন্ত্রীদের সঙ্গে মিলে সচিবরা মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন। সরকার পতনের পর মন্ত্রীদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ মানুষ। এ ইস্যুতে সচিবরাও ভয়ে আছেন। এজন্য অনেকে অফিসে আসছেন না।
আরেকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার পতনের পর মন্ত্রীর পদ ফাকা। অনেক সচিবও অফিস করছেন না। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়-বিভাগের কার্যক্রমে এক প্রকার স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।