বিসিএসসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী এবং পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইউ) একটি সূত্র।
বিএফআইউ সূত্র জানায়, ব্যাংক হিসাব জব্দ সংক্রান্ত চিঠি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএফআইউয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) গ্রেফতার হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এরই মধ্যে তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) গ্রেফতারকৃতদের আদালতে হাজির করা হয়। পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করছেন।
এর আগে, গত রোববার (৭ জুলাই) রাতে বিসিএসের প্রশ্নফাঁস নিয়ে পিএসসির বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফেসবুকে সৈয়দ আবেদ আলীর পোস্টগুলো ভাইরাল হতে থাকে।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার (৮ জুলাই) রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে সিআইডির উপপরিদর্শক নিপ্পন চন্দ্র চন্দ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরপর প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন— পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং বেকার যুবক লিটন সরকার।