টানা ৯ মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। বর্বর এই আগ্রাসনে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক মানবিক সংকট।
এমন অবস্থায় গাজা নিয়ে যুক্তরাজ্য ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিতে চায় বলে ঘোষণা দিয়েছেন নতুন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ব্যবহারের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
রোববার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধের বিষয়ে ব্রিটেন ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান চায় এবং সেখানে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ও হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির জন্য তার দেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবে বলে নতুন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি রয়টার্সকে বলেছেন।
গত সপ্তাহে ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর ল্যামি জার্মানি সফরে গিয়েছেন। ১৪ বছরের কনজারভেটিভ সরকারের সমাপ্তি এবং কিয়ার স্টারমার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর এটিই তার প্রথম আন্তর্জাতিক সফর।
বার্লিনে এক সাক্ষাৎকারে ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘বাইরের বিশ্বের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের সময় এসেছে যুক্তরাজ্যের। আমি ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে ফিরে যেতে চাই। আমরা খুব স্পষ্ট বলেছি, আমরা সেখানে যুদ্ধবিরতি দেখতে চাই… আমরা সেই বন্দিদেরও মুক্ত দেখতে চাই।’
তিনি আরও বলেন: ‘যুদ্ধ থামাতে হবে, সাহায্য সেখানকার মানুষের হাতে পৌঁছাতে হবে, এবং আমরা সেই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে সমস্ত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যবহার করব।’
তবে এ বিষয়ে নতুন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বিস্তারিতভাবে কিছু বলেননি।
রয়টার্স বলছে, সংসদীয় ভোটে ভূমিধস বিজয় সত্ত্বেও গাজা যুদ্ধের বিষয়ে দলীয় অবস্থান নিয়ে অসন্তোষের মধ্যে সর্বশেষ নির্বাচনে বৃহৎ মুসলিম জনসংখ্যার এলাকায় লেবার পার্টি উল্লেখযোগ্য নির্বাচনী ধাক্কা খেয়েছে।
এদিকে হামাস চুক্তির শর্তাবলীতে একটি সংশোধিত প্রস্তাব দেওয়ার পরে শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি মুক্তির জন্য চলমান প্রচেষ্টা গতি পেয়েছে এবং ইসরায়েল বলেছে, আগামী সপ্তাহেও আলোচনা চলবে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ল্যামি আরও বলেন, জলবায়ু সংকটের পাশাপাশি ইউরোপীয় এবং উদীয়মান শক্তিগুলোর সাথে সম্পর্কসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী নিজের অবস্থান পুনঃস্থাপন করতে চাইবে ব্রিটেন। অতীতের ইউকে-ইইউ নিরাপত্তা চুক্তির ধারণার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা ব্রেক্সিটের বছরগুলোকে পেছনে ফেলে রাখি… আমরা একসাথে অনেক কিছুই করতে পারি।’
ল্যামি রোববার পোল্যান্ড ও সুইডেন সফর করবেন এবং সেখানে তিনি সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় ফোকাস করবেন বলে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে।