দেশে বাকস্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। সাইবার নিরাপত্তা আইনের নামে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে। কথায় কথায় তাদের গ্রেপ্তার করে জেলে আটক করে রাখা হয়েছে। ঘুষ-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ জাতীয় গর্হিত কাজ কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
মঙ্গলবার (২৬ জুন) ‘নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ দেশের সাধারণ নাগরিকদের নানাভাবে হয়রানি করে জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। ভিন্ন মতের মানুষদের গ্রেপ্তার করে তাদেরকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে বন্দি করে রেখে হয়রানি করা হচ্ছে।
জামায়াত আমির বলেন, সরকারের অগণতান্ত্রিক এবং ইসলাম ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় হামলা-মামলা দিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বিরোধী দল সরকারের বৈধ সমালোচনা করবে, ত্রুটিবিচ্যুতি ধরিয়ে দেবে এবং জনগণকে সচেতন করবে এটাই স্বাভাবিক। সরকার যদি বিরোধী দলের ইতিবাচক সমালোচনা সহ্য করা করতে না পারে তাহলে বুঝতে হবে সেটি গণতান্ত্রিক সরকার নয়, স্বৈরাচারী ও জালিম সরকার।
তিনি জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত ‘নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের শোষিত-নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংগঠন ও সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, যুগের পর যুগ মানুষ নিষ্ঠুর ও নির্দয়ভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্যাতিত হয়েছে। বর্তমান সভ্য আধুনিক যুগেও বিশ্বব্যাপী সংঘাত-সংঘর্ষ জিইয়ে রেখে সাধারণ মানুষের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সারাবিশ্বেই আদম সন্তানের ওপর চালানো নিষ্ঠুর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ হওয়া উচিত।
নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং ওআইসি-সহ সব শান্তিকামী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পক্ষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মী, সাংবাদিক, আলেমসহ আটক সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।