জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ থেকে ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যবহার করতে দিতে সম্মত হয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭।
টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান এই যুদ্ধে সহায়তার জন্য ইউক্রেনকে এই অর্থ দেওয়া হবে।
শুক্রবার (১৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমরা যে পিছিয়ে যাচ্ছি না’ সেটা রাশিয়াকে আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই পদক্ষেপ। তবে এর বিপরীতে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোতে রাশিয়ার প্রায় ৩২৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ফ্রিজ বা জব্দ করা আছে। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এসব সম্পদ জব্দ করা হয়।
এসব সম্পদ থেকে বছরে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার সুদ আসে। জি-৭ এর পরিকল্পনা অনুযায়ী এই তিন বিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সরিয়ে ইউক্রেনের ৫০ বিলিয়ন ডলারের ঋণের বার্ষিক সুদ হিসেবে পরিশোধ করা হবে।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ার জব্দ করা এই অর্থ চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে ইউক্রেনের হাতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা কম। কিন্তু এটিকে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ ও দেশটির অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ইতালিতে জি-৭ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং জো বাইডেন দশ বছর মেয়াদী একটি দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। চুক্তিটিকে কিয়েভ ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এই চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দেবে কিন্তু ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে ওয়াশিংটন সৈন্য পাঠিয়ে সহায়তা করবে এমন কোনও প্রতিশ্রুতি এই চুক্তিতে নেই।
ইতালির পুগলিয়াতে এবারের জি-৭ সামিট হচ্ছে। সেখানেই এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, এই ৫০ বিলিয়ন ডলার ইউক্রেনের জন্য ব্যবহার করা হবে এবং এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আরেকবার বার্তা দেওয়া হচ্ছে- ‘আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি না’।
তিনি বলেন, পুতিন ‘আমাদের অপেক্ষা করিয়ে রাখতে পারবেন না, তিনি আমাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করতে পারবেন না এবং যুদ্ধে জয়ী না হওয়া পর্যন্ত আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি’।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য সহযোগী দেশগুলোকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি।
নতুন নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সত্যিকার অর্থেই ঐতিহাসিক দিন এবং আমাদের স্বাধীনতার পর (১৯৯১) এটাই ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী চুক্তি।’
উল্লেখ্য, জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো হলো- কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এসব দেশ ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে।