ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পরিবেশ রক্ষায় সারাদেশে গাছ লাগায়, আর বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে সেই গাছ ধ্বংস করে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৫ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে সরকার উৎখাতের আন্দোলনের নামে মানুষকে যেমন হত্যা করা…তাছাড়া বাস, ট্রাক, গাড়ি, রেল, লঞ্চ, সেগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া আর বৃক্ষ নিধন করা হয়। লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ কেটে ফেলে দেয় জামায়াত-বিএনপি। আমরা যেখানে গাছ লাগিয়েছে সেগুলো তারা ধ্বংস করেছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের বিষয়।
১৯৮৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করছে জানিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, তখন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মূল দল আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্য বৃক্ষরোপণ করবে। আমাদের নির্দেশ ছিল এবং সেই নির্দেশনা আমরা এখনো পালন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে একটা সবুজ আচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই তিনি সেখানে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ উদযাপন করেন। বৃক্ষরোপণের জন্য মানুষকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন। কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে যে ঝাউ বন সেটি জাতির পিতার উদ্যোগে রোপণ করা হয়। তাছাড়া আমাদের দ্বীপ অঞ্চল, বিশেষ করে চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করা এবং সেখানে প্রত্যেক প্রজাতির পশুপাখি জোড়ায় জোড়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। সেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুরু করে দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব, তা থেকে দেশকে আমরা মুক্ত করতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। যে পদক্ষেপগুলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন।
পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি গাছ লাগান, গরমে ছায়ায় আরাম পাবেন। ফল গাছ হলে তো খেতেও পারবেন। নিজের গাছের ফলের তৃপ্তিই আলাদা। আমরা সবাই মিলে গাছ লাগিয়ে নিজেদের পরিবেশটা সুরক্ষায় মনোযোগ দিই। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে কোথাও একটি গাছ কাটা হলে তিনটি গাছ লাগাতে হবে। সেই নিয়মেই সরকার কাজ করছে। বনভূমির পরিমাণ বেড়েছে বলেও দাবি করেন সরকারপ্রধান।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এত দীর্ঘস্থায়ী ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছ্বাস হয়নি। এবারই প্রথম হয়েছে। আট লাখ মানুষকে আমরা শেল্টারে আনতে পেরেছি। এত চাপেও আমাদের উপকূলে দেওয়া উপহারের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য করে দেওয়া ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষায় গাছপালা ভূমিকা রাখে জানিয়ে সবাই গাছ লাগানোর তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।