ডিবিপ্রধান বলেন, কলকাতার ওই বাসায় আসা-যাওয়া করবে— এমন দুজনকে ঠিক করা হয়। মাস্টারমাইন্ড সেখানে সব কিছু ঠিক করে, কোন গাড়ি ইউজ হবে, কাকে কত টাকা দিতে হবে। কারা কারা থাকবে— সবকিছু ঠিক করে পাঁচ-ছয়জনকে রেখে ১০ মে দেশে চলে আসেন মূলপরিকল্পনাকারী।
জানা গেছে, ভারতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে হলে সবপক্ষের (ভাড়াটিয়া, দালাল ও বাড়িয়ালা) ছবিসহ সব নথি স্থানীয় থানায় জমা দিতে হয়। জমা দেওয়া নথিতে দেখা গেছে, মুহম্মদ আখতারুজ্জামান, আমানুল্লা সৈয়দ এবং শালেস্তি রহমান ওই ফ্ল্যাটে থাকবেন বলে সেটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল।
তথ্য বলছে— নিউটাউন থানায় ওইসব নথি জমা দেওয়া হয় চলতি মাসের ১ তারিখে। থানায় জমা দেওয়া নথিতে ‘তিনজন থাকবেন’ লেখা থাকলেও ফ্ল্যাটটি সল্ট লেক অঞ্চলের এক দালালের মাধ্যমে ভাড়া নিয়েছিলেন মুহম্মদ আখতারুজ্জামানই। এ সময় তিনি নথি হিসেবে নিউইয়র্কের ড্রাইভিং লাইসেন্সের নম্বরও জমা দিয়েছিলেন। পেশা হিসাবে তিনি সেখানে লিখেছেন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার।
সিআইডির আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটটি সন্দীপ রায় নামের পশ্চিমবঙ্গের শুল্ক বিভাগের এক অফিসারের।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান বা শাহীন। শাহীন এমপি আজিমের বাল্যবন্ধু। কিন্তু তার সঙ্গে ব্যবসায়িক বিরোধ কী নিয়ে ছিল— সে বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২৫ এপ্রিল জিহাদ অথবা জাহিদ এবং সিয়াম কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনে বাসা ভাড়া করে। ৩০ এপ্রিল ঘটনার মাস্টারমাইন্ড কলকাতায় যান। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করবেন উনি ও আরেকজন। সাথে ছিলেন তাদেরই গার্লফ্রেন্ড। তিনজনে মিলে ৩০ এপ্রিল বিমানযোগে কলকাতা চলে যায়। যে বাসা ভাড়া করা হয়; সেখানে তারা উঠে। বোঝাতে চায় এখানে পরিবার থাকবে। অপরাধের কোনো কিছু ঘটবে না।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আজিম। প্রথমে তিনি উঠেছিলেন বরাহনগরে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। সেখান থেকে দুই দিন পর নিখোঁজ হন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে নিখোঁজ ডায়েরি করেন গোপাল। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। তারপর সংসদ সদস্যের খোঁজ শুরু হয়।
সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, আজিম কলকাতায় আসার অনেক আগেই সেখানে চলে এসেছিল অভিযুক্তরা। শহরে বসেই তারা খুনের পরিকল্পনা করেন। দুই অভিযুক্ত কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে ছিলেন গত ২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত।