দেশে এখন ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে। সামনে এটি আরও বিপজ্জনক হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে তিনমাসের আমদানি ব্যয় সমান রিজার্ভ থাকার কথা। সে হিসাবে আমাদের দেশে এখন রিজার্ব ডলার থাকার কথা ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন। কিন্তু এখন আছে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর সব মিলিয়ে ১৫ বিলিয়ন ডলারও নেই, ১১ বিলিয়ন ডলার আছে কিনা সন্দেহ। এই অবস্থায় প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে টাকার ভ্যালু। মূল্যস্ফীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে।
রোববার (১৯ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় রংপুর সফরে এসে সাকির্ট হাউজে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে সরকারের নিষেধাজ্ঞা ঠিক না। বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণের সম্পদ। এই সম্পদ সরকার ঠিকঠাকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করছে কিনা, সেই বিষয়ে জনগণকে জানতে হবে। আর জনগণ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে। আমাদের দেশে বিনিয়োগ আসছে না। আমরা যে পরিমান খরচ করছি তার থেকে অনেক কম প্রবেশ করছে। আমরা কি কষ্ট করছি, আগামীতে আরো কি হবে এগুলো সবাইকে জানাতে হবে। সরকার এগুলো গোপন করছে। গোপন করার অর্থ আপনারা জনগণের স্বার্থ বিরোধী কিছু করছেন। না জানানো টা অপরাধ।
ডলারের দাম বেড়েই চলছে। টাকা দিয়ে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলো টিকিট বিক্রি করে তাদের দেশে টাকা নিতে পারছে না ডলারের অভাবে। বিনিয়োগ কমবে কেন। এই অবস্থার সৃষ্টি হলো কেন, ৪০-৪৫ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ হঠাৎ জিরো হলো কেন। এই রিজার্ভ কই গেলো। ইমপোর্ট করতেই পারছে না সরকার। মিল ফ্যাক্টরিগুলো চলতে পারছে না। মানুষ বেকার হয়ে যাচ্ছে। অসহনীয় পরিবেশ থেকে মানুষ মুক্তি চায়। কিন্তু আমরা মুক্তি দেখতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ডোনাল্ড লু সফরে এসে বললো আমেরিকান অনেক কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করছে কিন্তু তারা প্রফিট নিয়ে যেতে পারছে না দেশে। এসব কারণে এ দেশে কেউ আর বিনিয়োগ করতে চাইবে না। তাছাড়া এ সরকার প্রচুর লুটপাট করছে । বিদ্যুৎ আর গ্যাসে লুটপাট হয়েছে। বিদেশে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে। যার কারণে আজকের এই অবস্থা।
ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদের অনেক কথাই বলছেন। আমি ওনাকে শ্রদ্ধা করি। আওয়ামী লীগ বলছে তারা অনেক শক্তিশালী হয়েছে। আসলে এই শক্তি কি দানবীয় শক্তি না শুভ শক্তি। দানবীয় শক্তি যদি হয় তা আমরা পছন্দ করি না। জনগণ পছন্দ করে না।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈশিষ্ট হারিয়েছে। দল হিসেবে তারা রাজনৈতিক এজেন্ডা হারিয়েছে। এখন তারা কিছু পেশাজীবী আর সরকারি কর্মকর্তা নিয়ে দল। আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের কথা ভাবতে। মানুষ আওয়ামী লীগের ছায়া তলে বিশ্রাম নিতে পারতো। এখন আর পারে না। তারা কিছু হাস্যকর ও অপ্রয়োজনীয় কিছু করছে যার কারণে আওয়ামী লীগ এখন দেশের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আলা উদ্দিন মিয়া, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, কেন্দ্রীয় সদস্য লোকমান হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।