শনিবার (১৮ মে) মগবাজারে নিজের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে এই মন্তব্য করেন।
অলি আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল। যেকোনো সময় ব্যাপক ধস নামতে পারে। আমরা মনে করি এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে দেশ আরও ক্ষতিগ্রস্থ হবে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে বাধ্য। হয়ত নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেতে পারে।
দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতাকে দায়ী করেন এই রাজনীতিক।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিগত ১৫ বছর যাবত বাকশালী কায়দায় দেশ শাসন করছে। তাদেরকে বলব, আল্লাহর ওয়াস্তে এখন ক্ষান্ত হোন। জনগণকে তাদের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করার সুযোগ দেন। আমি না থাকলে দেশ চলবে না এই ধরণের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের হয়ে যান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে, সর্বসাধারণের ওপর জুলুম-নির্যাতন ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। দেশে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে দেশে কখনই শান্তি ফিরে আসবে না, অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কাটবে না।
‘নতুন কর্মসূচি আসবে’
অলি বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কৃষক-শ্রমিক-যুবক-ছাত্র সমাজ সকলে নিজ নিজ জায়গা থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব বিএনপির নেতৃত্বে নতুন কর্মসূচি ইনশা আল্লাহ ঘোষণা করব। সকলে ঐক্যবদ্ধ হোন, প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইনশা আল্লাহ এই বাকশালী সরকারের পতন হবে, দেশে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
‘ভারত সরকারের সমালোচনায়’
অলি আহমেদ বলেন, দেশের গণতন্ত্র ধবংস ও স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভারত সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী। আমি নিজে শুনেছি, কয়েকদিন পূর্বে ভারতের কংগ্রেসের সভাপতি একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা পাকিস্তানকে দুই টুকরা করে তাদেরকে দূর্বল করে দিয়েছি। তার এই বক্তব্য সুস্পষ্ট বুঝা যায়, বাংলাদেশের জনগণ তাদের বন্ধু নয়। বিগত কয়েক বছর ভারত সরকার বাংলাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনুরূপ দায়িত্ব নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো বিরূপ মন্তব্য নাই। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভারত সরকার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা দলের সাথে সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকবে বরং ভারতের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব স্থাপনে মনোযোগী হবে। আসুন আমরা একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করি, ভালো প্রতিবেশি হিসেবে বসবাস করি… এতেই সকলের মঙ্গল নিহিত।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ভারতকে আমাদের দেশের সমুদ্র বন্দর, স্থল বন্দর, বিভিন্ন সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে, অনেকগুলো অসম চুক্তি স্বাক্ষরও করেছে। তারপরও কেনো ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
অলি আহমেদ বলেন, মেহেরবানী করে আমাদেরকে আমাদের মতো করে থাকতে দিন। ভারত সরকারের বর্তমান মনোভাব পরিবর্তন না হলে উভয়ই ক্ষতিগ্রস্থ হবে যা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলম তালুকদার, নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, কে কিউ স্যাকলায়েন প্রমুখ।