দুই বছর আগে মৃত্যু হয় ভারতের বিখ্যাত গায়ক বাপ্পি লাহিড়ির। সোনার গহনা ছিল এই সংগীত তারকার সবচেয়ে পছন্দের। কারণ তিনি মনে করতেন সোনা সৌভাগ্যের প্রতীক। তাই নিজেকে সোনায় মুড়ে রাখা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল বাপ্পিদার।
তার অঙ্গজুড়ে সারাক্ষণ শোভা পেত নানা ধরনের অলঙ্কার। গলায় রত্ন খচিত নানা ধরনের পেনডেন্ট, হার। ১০ আঙুলে ১০ রকমের আংটি। বাপ্পি লাহিড়ির সংগ্রহে ছিল ৭৫৪ গ্রামের সোনার গহনা। এই সোনার বাজারে মূল্য ছিল ৫০ লাখের বেশি।
শোনা যায়, একটি করে অ্যালবাম মুক্তি পেলেই একটি করে সোনা বা হীরের গহনা কিনতেন বাপ্পি। সংস্কার ছিল, তা হলেই তার গান সোনার মতোই চমকাবে সবার হৃদয়ে। তিনিই এতোই সোনাপ্রেমী ছিলেন যে শেষ জন্মদিনে নিজেই নিজেকে উপহার দিয়েছিলেন সোনার পেয়ালা!
তার এই সব ব্যাক্তিগত প্রতিটি গহনার জন্য আলাদা করে বাক্সও ছিল। যেখানে দিনের শেষে পরিচ্ছন্ন করে রেখে দেওয়া হতো যাবতীয় গহনা। প্রতিটি অলঙ্কার যেন যত্নে থাকে তার জন্য আলাদা করে দেখভালের লোকও নিযুক্ত করেছিলেন। বাপ্পিদার সেই সহকারী নিয়মিত গহনাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও করতেন।
তার গহনা কেউ স্পর্শ করুক এমনটা তিনি মোটেও পছন্দ করতেন না। একবার তার এক সহকারী গহনার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিনয়ের সঙ্গে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সুরকার। অনেকেই নতুন গহনা ছুঁয়ে দেখতে পছন্দ করেন। বাপ্পিদার তাতেও আপত্তি ছিল। কেউ যাতে তার শরীর এবং গহনা স্পর্শ করতে না পারে, তার জন্য সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন
এ তো গেল মালিকানার কথা। এত সোনার গহনা কেন পরতেন বাপ্পি লাহিড়ি? সেই বিষয়টি একবার নিজের মুখেই জানিয়েছিলেন প্রয়াত গায়ক।
ঋতুপর্ণা ঘোষের ‘ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি’ টক শোতে একবার বাপ্পি বলেছিলেন, ‘আমার জন্য সোনা ভীষণ লাকি জিনিস। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাসী মানুষ। আমার পরনের সবকটি গহনাই কুরের পায়ে ছোঁয়ানোও। কোনও না-কোনও ঠাকুরকে নিবেদিত এই সব গহনা।’