দেশের সম্ভাবনাময় শিল্পগুলোর মধ্যে পর্যটন শিল্প অন্যতম। কিন্তু বিশাল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিংয়ের অভাবে পর্যটন শিল্প এখনো অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে পর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিং এবং এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (১১ মে) রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ কথা বলেন এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটন শিল্পকে প্রমোট করার জন্য বড় অঙ্কের অর্থায়ন করা হয়ে থাকে। বিদেশিদের আকর্ষণের জন্য বিমানবন্দরগুলোতে পর্যটন শিল্পের যথেষ্ট ব্র্যান্ডিং ও প্রচারণা থাকলেও বাংলাদেশে এ ধরনের পদক্ষেপ খুব একটা দেখা যায় না। এই খাতের উন্নয়নে এসব বিষয়ে দৃষ্টিপাত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো পর্যটন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে বড় অর্থ আয় করছে। পর্যটন খাতে আমাদেরও অনেক সম্ভাবনা আছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্র্যান্ডিংসহ ট্যুর অপারেটরদের দক্ষতা উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। কারণ, বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশে এসে প্রথমে ট্যুর অপারেটরদের কাছে যায়। ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডদের দক্ষতার অভাব থাকলে পর্যটকদের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়।’
এই খাতের উন্নয়নে ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে পর্যটন শিল্পের। প্রধানমন্ত্রী পর্যটন শিল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এ শিল্পের উন্নয়নে সরকারি বিশেষজ্ঞ, একাডেমিয়ানদের সমন্বয়ে যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ ড. মুনাল মাহবুব বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক আসে এবং দেশে ফিরে গিয়ে তারাই প্রমোট করে। কিন্তু আমরা নিজেরা এই খাতের প্রমোশনে কাজ করি না। কক্সবাজার কুয়াকাটা ছাড়াও বাংলাদেশে অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে যা সম্পর্কে আমাদের নিজেদেরই ধারণা খুব কম। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আগের থেকে অনেক উন্নত। এই খাতের অধিকতর উন্নয়নে একে বিশ্বব্যাপী প্রমোট করতে হবে। সেই সঙ্গে নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্ব দিতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি মোহাম্মদ ইকবাল মাহমুদ। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা দেশের পর্যটন শিল্পের ব্র্যান্ডিংয়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা, পর্যটন ও রিসোর্ট এলাকাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, পর্যটন এলাকাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার তাগিদ দেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন, পরিচালক, এফবিসিসিআই মহাসচিব ও অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা।