দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। কোথাও কোথাও এর মাত্রা ‘অতি তীব্র’। উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে সাতদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে দেশের স্কুল-কলেজগুলোয়। শিক্ষার্থীদের তাপ থেকে সুরক্ষিত রাখতে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। পাইপ লাইনে রয়েছে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়।
এরমধ্যে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক ও ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বৈঠক ডেকেছে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। ক্লাসের সময়সীমা কমিয়ে এনেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিত থেকে দিতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো নিজেদের মতো করে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সারাদেশের ওপর দিয়ে প্রবহমান তীব্র দাবদাহের (হিট ওয়েভ) কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষাগুলো যথারীতি চলমান থাকবে। বর্তমানে প্রচলিত ১০ শতাংশ অনলাইন ক্লাসের পরিবর্তে শতভাগ অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তীব্র দাবদাহের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি সপ্তাহে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় সকল পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান দাবদাহের কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনায় আগামী শনিবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সশরীরে সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে ক্লাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কার্যক্রম যথারীতি চালু থাকবে।
তীব্র দাবদাহের কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাসও অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষা সশরীরেই হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের অন্যতম বাহন শাটল ট্রেন ও শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাস নিয়মিত সূচিতে চলবে।
এক জরুরি সভা শেষে এসব সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, অফিস খোলা থাকবে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বিবেচনায় ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তীব্র দাবদাহের কারণে শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস আগামী ২২ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়ে অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা যথারীতি চলমান থাকবে।
সশরীরে ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক ও ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস। তাদের ক্লাস অনলাইনে চলবে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাসের সময়সীমা কমিয়ে এনেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্লাস সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চলবে। পূর্বে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ক্লাস হতো। এছাড়াও গত শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সকল কলেজের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।