এদিকে শিক্ষককে বৈদ্যুতিক খুঁটিয়ে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আইয়ুব আলীর পুল এলাকায় শিক্ষক আক্তারের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আক্তার লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের লাহারকান্দি এলাকার মৃত লকিয়ত উল্যাহর ছেলে ও ঢাকার ক্যামব্রিজ স্কলার্স স্কুলের শিক্ষক।
আক্তারের পরিবার সূত্র জানায়, ঈদের ছুটিতে আক্তার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর আইয়ুব আলীর পুল এলাকায় তিনি ছোট ভাই মাসুদের বাড়িতে দাওয়াতে যান। সেখান থেকে আসার পথে পেঁচা সুমন, সাইমন হোসেন, অটোরিকশা চালক আলাউদ্দিন আলো, মমিন উল্যাহ ও সুমনসহ কয়েকজন মলম পার্টি অপবাদ দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে তার হাত-পা বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে তাকে জনসম্মুখে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তারা।
এদিকে ঘটনার সময়ের ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, মলম পার্টি বলে পেঁচা সুমন নামে এক যুবক লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি শিক্ষক আক্তারের পায়ে আঘাত করছেন। একইসঙ্গে সুমন বলছেন তোদের কারণে কত মাইনষে কাঁদে। এসময় শিক্ষক আক্তার আল্লাহকে ডেকে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। ঘটনাটি পাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজন যুবক দেখছিলেন। কেউই তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়নি। শিক্ষক আক্তারকে পেটাতে ব্যবহার করা লাঠিও ভেঙে কয়েকভাগ হয়ে যায়।
শিক্ষক আক্তার হোসেন বাবু বলেন, মাসুদের বাড়ি থেকে আসার সময় পথরোধ করে তারা আমার মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তারা আমাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়েছে। এতে আমি অচেতন হয়ে পড়ি। আমি ওই বখাটেদের বিচার চাই।
আক্তারের ভাই মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, আমার ভাইকে মলম পার্টি আখ্যা দিয়ে নির্যাতন করেছে বখাটেরা। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারাই প্রকৃত মলম পার্টি।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. একে আজাদ বলেন, আক্তারের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেলে তার শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষকের ভাই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।