ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুল বাকী মিয়া জানান, মেট্রোরেলের ছয়টি রুট ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ করে ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করার লক্ষ্য সরকারের। সরকারি এ পরিকল্পনায় মেট্রোরেলের লাইন-২-এ পুরান ঢাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
ডিএমটিসিএল পরিচালক জানান, এমআরটি লাইন-২ রুট প্ল্যানটি হলো— গাবতলি-ঢাকা উদ্যান-মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড-ঝিগাতলা-সায়েন্স ল্যাবরেটরি-নিউমার্কেট-আজিমপুর-পলাশী-ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ-গুলিস্তান-মতিঝিল-কমলাপুর স্টেশন-মান্ডা- দক্ষিণগাঁও-ধামড়িপাড়া-সাইনবোর্ড-ভুইঘর-জালকুড়ি-নারায়ণগঞ্জ। এ রুটের সঙ্গে ব্রাঞ্চ লাইন (সংযুক্ত রুট) হিসেবে গোলাপশাহ মাজার-নয়াবাজার-সদরঘাট। এ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ কিলোমিটার।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এলিভেটেড ও আন্ডারগ্রাউন্ড সমন্বয়ে এমআরটি লাইন-২ নির্মাণ করতে খরচ হবে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্প নির্মাণে অর্থ সংস্থানের জন্য উন্নয়ন সহযোগী খোঁজা হচ্ছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সাবেক পরিচালক এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, মেট্রো সিস্টেম এমন হওয়া উচিত ছিল যেখানে একটা লাইন থেকে অন্য লাইনে হেঁটেই চলে যাওয়া যাবে। একইসঙ্গে সার্কুলার মেট্রোরেল হলে সবাই উপকৃত হবে।
এমআরটি-২ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৫ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে বৈদেশিক ঋণ হিসাবে। বাকি ১৫ হাজার ২১০ কোটি খরচ হবে সরকারি খাত থেকে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, টিওডিসহ স্টেশন প্লাজার খরচ এখানে ধরা হয়নি।
এমআরটি লাইন ২-এর ডিপো ও ডিপো এক্সেস করিডর এবং কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মাণে ডেমরার মাতুয়াইল ও দামড়িপাড়া মৌজায় গ্রিন মডেল টাউন এবং আশুলিয়া মডেল টাউনের মধ্যবর্তী স্থানে মোট ৬৫ হেক্টর জমি রাজউকের ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ডিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান এবং পুরান ঢাকাকেন্দ্রিক ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে চালু হওয়া দেশের প্রথম মেট্রোরেল ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর জনসাধারণের জন্যে খুলে দেওয়া হয়। এমআরটি-৬ লাইনের দ্বিতীয় পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে যাত্রী পরিবহন চলছে। ২০২৫ সাল নাগাদ এটি কমলাপুর পর্যন্ত চালু হতে পারে।