বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গুম, খুন ও পঙ্গুত্বের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের মাঝে ঈদের শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেওয়ার সময় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আটক করে বিভিন্ন মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়। এখনও তিনি নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।
গুম, খুন ও নিপীড়ন নির্যাতনের স্বীকার হওয়া পরিবারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ অবস্থা সারাদেশের, শুধু বিএনপির নয়। পুরো বাংলাদশের মানুষের একই অবস্থা। পুরো দেশের মানুষ ভয়ে আতঙ্কে থাকে কখন কাকে কীভাবে তুলে নিয়ে যায়। কোনো নিশ্চয়তা নেই।
সরকারকে পরাজিত করাই মুক্তির একমাত্র পথ এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের জনগণের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। একাত্তরে যুদ্ধের সময় মানুষ যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল একইভাবে আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুক্তির পথ একটাই তা হলো সরকারকে পরাজিত করা।
তিনি বলেন, দমন নিপীড়নের কবলে পড়ে আজ অনেকে বাবাকে ফিরে পেতে চায়। ছোট থাকতে বাবাকে হারিয়েছে। গুম করে রাখা হয়েছে বেঁচে আছে নাকি নেই তাও পরিবারের লোকজন জানে না। কেউ কেউ অনেক বড় হয়েছে তবুও হাসি মুখে কথা বলতে পারে না। এই হচ্ছে আমাদের নির্যাতিত, নিপীড়িত, খুন হওয়া, গুম হওয়া অসহায় পরিবারগুলোর বর্তমান অবস্থা।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ শুধু এই পরিবার গুলোর নয়। সারা বাংলাদেশের একি অবস্থা শুরু হয়েছে। আমাদের দলের শুধু নয়। সারাদেশে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে মানুষ সব সময় একটা ভয়ে থাকে। ত্রাসে থাকে। কখন কাকে কীভাবে তুলে নিয়ে যায়। কোনো নিশ্চয়তা নেই।
‘এটা ভয়াবহ, একটা জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ কি? সেই মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি। একটি গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে যতটুকু লড়াই সংগ্রাম করা যায়, তার থেকেও বেশি সংগ্রাম আমরা করছি,’ বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণ চায়, এটা কোনো দল-মত-বর্ণ নয়, বাংলাদেশের মানুষের, সেই ’৭১ সালের যুদ্ধের সময় যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, ’৬৯ এবং ’৯০ সালে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, ঠিক একইভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে হবে। কারণ এদের থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই পথ, এদেরকে পরাজিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এদেরকে পরাজিত করতে না পারলে আমরা তো মুক্তি পাচ্ছি না। এই নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। সুতরাং আমাদের প্রথম লক্ষ্য হবে নিজেদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা। দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে গোটা জাতিকে সমন্বিত করা। তারপর বিদ্রোহ, প্রতিরোধ সৃষ্টি করে এদেরকে পরাজিত করা।
পরে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গুম, খুন ও পঙ্গুত্বের শিকার ২১ নেতাকর্মীর পরিবারকে ঈদের শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন ফখরুল।