দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়েছে। এরপরই গাজায় গত প্রায় ছয় মাস ধরে চলে আসা ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও তেল আবিব গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি করবে না বলে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সোমবার জানিয়েছেন।
আনাদোলু বলছে, সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইসলামিক পবিত্র মাস রমজানে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। পবিত্র এই মাসটি মধ্যপ্রাচ্যে গত ১১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এবং আগামী ৯ এপ্রিল শেষ হতে পারে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের দূত গিলাদ এরদান দাবি করেছেন, জাতিসংঘের এই প্রস্তাব গাজা থেকে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি ‘নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে দুর্বল করবে’।
আনাদোলু বলছে, জাতিসংঘের এই রেজোলিউশনে ‘পবিত্র রমজান মাসের জন্য সকল পক্ষকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। যা পরে একটি স্থায়ী টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে পরিচালিত হবে।’
এই প্রস্তাবে ‘সমস্ত বন্দির অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির পাশাপাশি তাদের চিকিৎসা এবং অন্যান্য মানবিক চাহিদা পূরণের জন্য মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করার’ দাবিও করা হয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২ হাজার ৩৩৩ জনে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১০৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং বর্বর হামলায় আরও ১৭৬ জন আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এতে করে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২ হাজার ৩৩৩ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৪ হাজার ৬৯৪ জন মানুষ।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।