দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর আবারও মাঠের রাজনীতিতে সরব বিএনপি। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীর নয়াপল্টনে কর্মসূচি পালন করেছে দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দীর্ঘদিন পর দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে মহাসচিবের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন ফখরুল।
সংসদ নির্বাচনের আগে নানা দাবিতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হলে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এর পরদিন মির্জা ফখরুল গ্রেফতার হন। কারাভোগ শেষে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান তিনি।
এরপর শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আর সক্রিয় হননি বিএনপি মহাসচিব। মাঝে উন্নত চিকিৎসার জন্য চলে যান সিঙ্গাপুর। গত শনিবার ফিরে আসেন দেশে।
তবে এই সময়ের মাঝে গুঞ্জন শুরু হয় মির্জা ফখরুল শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক চাপে রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিচ্ছেন। সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। সহসা দেশে ফিরতে নাও পারেন এমন আলোচনা ছিল রাজনীতির ভেতরে-বাইরে।
তবে সব গুঞ্জন ছাঁপিয়ে দেশে ফিরে ১৪৮ দিন পর দলের বড় কর্মসূচিতে বক্তব্য দিলেন বিএনপি মহাসচিব। এর আগে রোববার (২৪ মার্চ) কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতারে বক্তব্য দেন ফখরুল।
এদিকে মির্জা ফখরুল রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হওয়ায় নেতাকর্মীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে ফিরেছে।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে আহ্বায়ক এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সদস্য সচিব করে ১৬ সদস্যের কমিটি করা হয়।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে তিন দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন।
মাইক ব্যবহারের অনুমতিসহ নির্বিঘ্নে সমাবেশ করায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে ২০ মার্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দেয় মুক্তিযোদ্ধা দল।
জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, সমাবেশে সারাদেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন। এ ছাড়া তিন দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ভোরে দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, পরে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ২৭ মার্চ আলোচনা সভা হবে।