গত সোমবার (১৮ মার্চ) ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরদারপাড়ায়।
জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের সবুর হোসেনের মেয়ে তাবাচ্ছুম আক্তার আদুরীর সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক ছিল ২৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে ইমন হাওলাদারের। তবে ২০১৯ সালে পারিবারিক সিদ্ধান্তে বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের রায়হানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাবাচ্ছুমের। প্রেমিক ইমনেরও সেই বিয়েতে সমর্থন ছিল বলে দাবি করেছেন তাবাচ্ছুম আক্তার আদুরী। এরপর ইমন বিদেশে চলে যান। তবে দুজনের যোগাযোগ ছিল। এদিকে রায়হান ও আদুরীর সংসারে ভূমিষ্ঠ হয় কন্যা সন্তান। প্রথমে কিছু ঝামেলা চললেও পরবর্তীতে ভালোই চলছিল দুজনের সংসার।
তবে ইমন হাওলাদার চলতি বছরের শুরুতে দেশে ফিরে তাবাচ্ছুম আক্তার আদুরীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসতে বলেন। একপর্যায়ে গত ১৫ মার্চ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ইমন বাকেরগঞ্জের গারুড়িয়ায় আদুরীর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তাকে নিয়ে পালান। পথিমধ্যে স্থানীয়রা দুজনকে ধরে থানায় সোপর্দ করেন। আদুরী তার মায়ের জিম্মায় বের হয়ে পরের দিন গিয়ে হাজির হন প্রেমিক ইমনের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ইমন ও আদুরীকে নিয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যান।
আদুরীর মা রিনা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে আমি আর গ্রহণ করব না। সে তার সাজানো সংসার ছেড়েছে। তার একটা সন্তান রয়েছে তাকেও ফেলে এসেছে।
তাবাচ্ছুম আক্তার আদুরী বলেন, কোতোয়ালি মডেল থানায় ইমন অঙ্গীকারনামা দিয়েছে সেখান থেকে বেরিয়ে আমাকে বিয়ে করবে। ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করার কথাও উল্লেখ করেছে। ওর কথায় আমি ঘর ছেড়েছি, থানায় সবার সামনে আমার স্বামীকে তালাক দিয়েছি। আমার মেয়েকে ফেলে এসেছি। কিন্তু থানা থেকে বেরিয়ে ইমন একটা মোটরসাইকেলে উঠে চলে যায়। আর তার স্বজনরা আমাকে চৌমাথা নামিয়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। তারা বলেছে আমাকে আরও তিন মাস ১০ দিন পর বিয়ে করবে। আমি এজন্য পুনরায় ইমনের বাড়িতে এসেছি। সে আমাকে বিয়ের কথা বলে আমার সব শেষ করে দিয়েছে। এখন আমার ফিরে যাওয়ার আর কোনো উপায় নেই।
বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, গত সোমবার তাবাচ্ছুম আক্তার আদুরীর মা রিনা বেগম বাদী হয়ে ইমন হাওলাদারসহ ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেছেন। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত ইমনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি জানান, ভুক্তভোগী আদুরীকে ওসিসিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।