৩৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে সাবেক কর কমিশনার আ. জা. মু. জিয়াউল হক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপপরিচালক সেলিনা আখতার বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। গত ১৩ মার্চ কমিশন মামলা দুটির অনুমোদন দেন।
জিয়াউল হক কর কমিশনার হিসেবে রাজশাহী, কর অঞ্চল-১৪ ও ০৭ এবং কর আপিলাত ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাবেক কর কমিশনার আ. জা. মু. জিয়াউল হকের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৩ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৪৬ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৩৭ হাজার ১৭৫ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৫২ হাজার ১৭৬ টাকা বিভিন্ন আর্থিক খাতে বিনিয়োগ হিসাবে দেখিয়েছেন। স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে জিয়াউল হক মোট ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৮২২ টাকার সম্পদ অর্জনের ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে দুদকের অনুসন্ধানে জিয়াউল হক কর্তৃক দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে বর্ণিত স্থাবর সম্পদ ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের উৎস যাচাইকালে পারিবারিক খরচ ও চাকরি খাতের বেতন ভাতা হিসাব করে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৯ টাকার সঞ্চয় পাওয়া যায়। যা তার বৈধ বেতন খাতের ব্যয় এবং সঞ্চয় অপেক্ষা ৬ কোটি ৩১ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৩ টাকার সম্পদ বেশি পাওয়া যায়। যা জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া হেবা এবং ঋণের নামে ২৬ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার ৭৭৩ টাকার মানিলন্ডারিং অপরাধের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা করেছে দুদক।
দ্বিতীয় মামলায় জিয়াউল হকের স্ত্রী মিসেস মোর্শেদা কুদ্দুস তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ৫ কোটি ২৪ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের ঘোষণা করেছেন। কিন্তু ওই সম্পদ অর্জনের জন্য তার কোনো বৈধ উৎস অনুসন্ধানকালে পাওয়া যায়নি। যে কারণে মিসেস মোর্শেদা কুদ্দুসকে প্রধান আসামি এবং স্বামী আ. জা. মু. জিয়াউল হককে সহযোগী আসামি করা হয়েছে এই মামলায়। মামলায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি ১ কোটি ৩৬ লাখ ২৩ হাজার ৫৩০ টাকা মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুটো মামলাই আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাজস্ব কর্মকর্তা জিয়াউল হক ১৯৯১ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৯ সালে তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে যান।