সোমবার (৬ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইড) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সাবেক গভর্নিং বডির কমিটির সদস্য ও এডহক কমিটির সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন, সাবেক অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন ও তার পিএ মিলে স্কুল থেকে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা করতে সেনাবাহিনী বা শিক্ষা ক্যাডার থেকে ডেপুটেশনে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মনিপুর স্কুলের এমপিওভুক্ত শিক্ষক আলমগীর জামিল ও অভিভাবক একলিমুর রেজা কোরাইল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি স্বেচ্ছাচারিতাও চলেছে। প্রতি বছর পুনঃভর্তি ও বিভিন্ন খাতে অযৌক্তিক ফি আদায়ের বিষয়টি অভিভাবকদের জন্য অসহনীয় হয়ে ওঠে। প্রতি বছর আট হাজার টাকা দিয়ে পুনঃরায় ভর্তি করাতে হয় ও বিভিন্ন চার্জ ধার্য করা হয়। যেমন বর্তমানে ১৫০ টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আইসিটি চার্জ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এ জন্য আমরা কোনো সুফল পাই না।
মনিপুর স্কুলে বার্ষিক আয় প্রায় শত কোটি টাকার ওপরে। এছাড়া, শিক্ষক নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যে আয় হয় প্রায় আরও কয়েক কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, কমিটির সদস্য ও এডহক কমিটির সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন ৪০০ কোটি টাকা, সাবেক অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন ৩০০ কোটি টাকা ও অধ্যক্ষের পিএ হুমায়ুন ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
তবে সুসংবাদ হচ্ছে, আমাদের অভিভাবকদের মধ্য থেকে একলিমুর রেজা কোরাইশ মামলা দায়েরের কারণে অবৈধ ট্রাস্টের সদস্য সদস্যরা বিদ্যালয় থেকে টাকা ভাগাতে পারেনি। ফলে এ বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তির টাকা ফান্ডে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা জমা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেনের বয়স আগামী ৯ ই মার্চ ৬০ বছর পূর্ণ হবে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী একজন প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ নিয়োগ আবশ্যক।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো এডহক ম্যানেজিং কমিটি বা পূর্ণাঙ্গ কোনো কমিটি না থাকায় এত বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা কঠিন। তাই বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক শৃঙ্খলা, ফলাফল, শিক্ষক কর্মচারী ও অভিভাবকের ওপর প্রভাবশালী মহলের যে অযাচিত হস্তক্ষেপ ও হয়রানি… ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়ে প্রভাবমুক্ত রাখতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজের) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ১১.১৩ এর বিধি বলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে একজন দক্ষ আর্মি অফিসার (বিগ্রেডিয়ার জেনারেল অব. বা নিয়মিত) অথবা প্রশাসনিকভাবে দক্ষ শিক্ষা ক্যাডারকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
তারা আরও বলেন, এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হওয়া দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়মতান্ত্রিক স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসা দরকার। তাই এই স্কুল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি কামনা করেন তারা।