আহত শিক্ষার্থীর বাবা আব্দুল্লাহ আল আমীন বাদী হয়ে সোমবার রাতে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ সিরাজগঞ্জে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে বর্তমানে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছে। অন্য তৃতীয় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একাডেমি ভবনের চতুর্থ তলায় ডা. সামাউন নূরের কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এ সময় আমার ছেলের বন্ধু আক্তারুজ্জামান বিকেল ৪টার দিকে ফোন করে বলে, আপনি দ্রুত সিরাজগঞ্জ চলে আসেন। আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি তাৎক্ষণিক বগুড়া থেকে রওনা হয়ে সিরাজগঞ্জ এসে আমার ছেলেকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে সংকটাপন্ন অবস্থায় দেখি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমালের ক্লাসমেটসহ তার অনেক সহপাঠী জানান, আসামি কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের লেকচারার। তিনি সর্বদা শিক্ষকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। তিনি সবসময় ব্যাগে অস্ত্র ও ছোরা নিয়ে ক্লাসে এসে অস্ত্র টেবিলের ওপর রেখে ক্লাসে লেকচার দিতেন। ছাত্রছাত্রীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্লাসে না আসতে বললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আজ বিকেল ৩টার দিকে পরীক্ষা চলাকালে আসামি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। এর একপর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার করার উদ্দেশ্যে গুলি করলে গুলিটি আমার ছেলের ডান পায়ের উরুর ওপরের অংশ লেগে গুরুতর জখম করে।
মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে আসামি অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলে, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা চলাকালে আমার ছেলের বন্ধুরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিকে অস্ত্রশস্ত্রসহ থানায় নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে ক্লাস চলাকালীন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালের ডান পায়ে গুলি করেন শিক্ষক রায়হান। চিৎকার শুনে সহপাঠীরা এসে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করে।
ঘটনার পর ওই শিক্ষকের বিচার চেয়ে মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।