জন্মদাত্রী হিসেবে আমার, আপনার, সবার জীবনে মায়ের স্থান সবার ওপরে। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা জানানোর জন্য একটি বিশেষ দিনের হয়তো কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরও আধুনিক বিশ্বে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে ‘মা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে, যার সূত্রপাত ১৯১৪ সাল থেকে।
প্রতিটা দিনই বিশ্ব মাতৃদিবস। মায়ের কোনো বিকল্প নেই, প্রতিটা দিনই মায়ের। কিন্তু সারা বিশ্বে একটি বিশেষ দিন এই বিশ্ব মাতৃদিবস পালন করা হয়। মায়ের সঙ্গে পৃথিবীর কোনো কিছুর তুলনা হয় না। প্রতিটি মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মা। আর এই মায়ের জন্য কোনো বিশেষ দিনের দরকার হয় না। মায়ের জন্য সম্মান, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা জানাতেই এই বিশেষ দিনের আয়োজন। মায়ের জন্য নির্ধারিত এই দিনটি শুধু মায়ের। তাই বিশেষ এই দিনে প্রত্যেকেই নিজের মতো করে মাকে বিশেষ সম্মান জানায়।
মা—ছোট্ট একটা শব্দ, কিন্তু কী বিশাল তার পরিধি! সৃষ্টির সেই আদিলগ্ন থেকে মধুর এই শব্দটা শুধু মমতার নয়, ক্ষমতারও যেন সর্বোচ্চ আধার। মার অনুগ্রহ ছাড়া কোনো প্রাণীরই প্রাণ ধারণ সম্ভব নয়। তিনি আমাদের গর্ভধারিণী, জননী।
কোনো মা, তা তিনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন, যত কুশ্রীই হন না কেন, সন্তানের কাছে তিনি দেবীর মতোই। আর শুধু হিন্দু ধর্মে কেন? ইসলামে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশতের কথা বলা হয়েছে। খ্রিষ্টধর্মেও রয়েছে মাদার মেরির বিশেষ তাত্পর্য। সেই মায়ের জন্য কি না বছরে একটা মাত্র দিন! আমরা তো দেশকেও ‘মা’ বলে ডাকি। দেশের মাটিকে মা জ্ঞান করে তার পায়ে মাথা ঠেকাই আমরা। বড় গলায় গর্ব করি দেশমাতৃকার জন্য।
কিন্তু নিজের মায়ের বেলায়? কতবার বলেছি—মা, তোমায় ভালোবাসি? জীবনচক্রের ঘূর্ণন শুরু হয় সেই জন্মলগ্ন থেকে। এরপর ছোটবেলা কাটিয়ে ওঠে কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব, বার্ধক্য আর সবশেষে অনিবার্য মৃত্যু। এই ধ্রুব সত্য শুধু আপনার-আমার নয়, সবার জন্য। তাই দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিন। যতদিন ‘মা’ বেঁচে আছেন, ততদিন, প্রতিটি দিন পালন করুন মা দিবস হিসেবে।