বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিজ দফতর কক্ষে বাংলাদেশে সফররত জার্মানীর বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) প্রকাশিত ২০২৩ সালের প্রতিবেদন ও র্যাংকিং এর জবাব প্রদান সংক্রান্ত জার্মান সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, সম্প্রতি আমি আরএসএফ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও র্যাংকিং এর ব্যাপারে সমালোচনা নয় বরং প্রকৃত তথ্য তুলে ধরেছি। কারণ ২০২৪ সালেও এটি তাদের ওয়েবসাইটে আছে। আরএসএফ এর প্রতিবেদনে অনেক ভুল তথ্য আছে এবং এর বিপরীতে প্রকৃত সত্য আমি তথ্য-প্রমাণসহ গণমাধ্যমে তুলে ধরেছি এবং এ সংক্রান্ত একটা চিঠি আরএসএফকে পাঠিয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য আরএসএফ এর কাছে সত্য তুলে ধরা এবং আমাদের নিয়ে করা র্যাংকিং পুনর্মূল্যায়ন করা।
এ সময় তিনি বলেন, মাঝে মাঝে কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খারাপ উদ্দেশ্যে সরকারের কাজের সমালোচনা করে। বর্তমান সরকার গঠনমূলক সমালোচনা স্বাগত জানায়। আমরা শুধু অপতথ্য ও ভুল তথ্য প্রতিরোধ করতে চাই। গণমাধ্যম সঠিক তথ্য-প্রমাণসহ সরকারের সমালোচনা করলে সেটি সরকারকে সহযোগিতা করে। কিন্ত ভুল তথ্য দিয়ে কোনোকিছুর সমালোচনা করলে সেটা কাউকে সহযোগিতা করে না।
সাক্ষাৎকার প্রদানকালে তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল দুনিয়া থেকে জনগণকে নিরাপদ রাখার জন্য সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। এর অপব্যবহার নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় সরকার এটি পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। এটিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সৌন্দর্য। তার সরকার সবসময় চাহিদার নিরিখে সবকিছুর সমন্বয় করে, পরিবর্তন করে।
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এক প্রশ্বের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশ ডেল্টাকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশ ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক ফোরামে জোরালো বক্তব্য তুলে ধরে আসছে। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সহযোগিতা ও বাস্তবসম্মত সমাধানে আসা প্রয়োজন।
রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ সময় মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, রোহাঙ্গিদের প্রতি বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সহানুভূতি দেখিয়েছে। বর্তমানে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য বড় ধরণের চাপের কারণ। বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে সম্মানজনকভাবে ফিরে যাক। গোটা বিশ্বের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিয়ে দায়িত্ব রয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে উন্নত রাষ্ট্রসমূহের ভূমিকা নেওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এ বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। তাছাড়া যেসব দেশের সামর্থ্য আছে তারা নিজ নিজ দেশে নিয়ে গিয়ে রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবনযাপনে সহযোগিতা দিতে পারে।