সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৩৩ জন শিক্ষার্থী ফেনী সরকারি কলেজে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে তারা বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষও তাদের আবেদন আমলে নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নের সুযোগ করে দেয়। এমনকি একাদশ শ্রেণির সাময়িক, বার্ষিক ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায়ও তারা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নেয়। পরবর্তীতে কলেজ থেকে ৩৩ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ডে বিভাগ ও বিষয় কোড সংশোধনের অনুরোধ জানিয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়।
সূত্র জানায়, সংশোধনের জন্য নির্ধারিত টাকাও ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। অথচ দীর্ঘদিনেও এ ব্যাপারে কোনো সাড়া মেলেনি। আগামী জুনের মাঝামাঝিতে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ তারা মানবিক বিবেচনায় হস্তক্ষেপ চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে কলেজের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ফেনী সরকারি কলেজে ভর্তির হওয়ার জন্যই এসব শিক্ষার্থী অন্য বিভাগে ভর্তি হয়েছিল। এতে তারা যথাযথ ভর্তি প্রক্রিয়া না মেনে বিভিন্ন অনৈতিক কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে নিজেদের ভর্তি নিশ্চিত করে। পরবর্তী সময়ে এসে বিভাগ পরিবর্তনের আবেদন করে।
ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোক্তার হোসেইন বলেন, বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া। আপাতত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এ শিক্ষার্থীরা চলমান নির্বাচনী পরীক্ষায় কোন বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছেন সেই বিষয়ে জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নিজামুল করিম বলেন, বিভাগ পরিবর্তনের আবেদনের বিষয়ে অবগত আছি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভাগ পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতিমালার ৫ দশমিক ১১ দফা অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা বা মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়ে পরবর্তী বিজ্ঞান বিভাগে আসতে পারবে না। এছাড়া প্রথম বর্ষে বিভাগ পরিবর্তনের কথা থাকলেও এ শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষার আগে এসে এমনটি করছেন। এখন মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগ পরিবর্তন সংক্রান্ত দফা শিথিল করলেই আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারব। তাছাড়া আমাদের কোনো সুযোগ নেই।
প্রফেসর ড. নিজামুল করিম বলেন, মূলত এ শিক্ষার্থীরা তখন নির্দিষ্ট জিপিএ না থাকায় ফেনী সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতে বিজ্ঞান বিভাগের পরিবর্তে অন্য বিভাগে ভর্তি হয়েছিল। এটি একপ্রকার প্রতারণার সামিল। এ বিষয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের আরও সচেতনতা প্রয়োজন। শিক্ষাক্ষেত্রে এমন কিছু হলে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।