কিশোর গ্যাং নিয়ে একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩ সালে ২৫টি খুনের সঙ্গে কিশোর গ্যাং জড়িত ছিল। এ বাহিনী বেশি মিরপুর, ডেমরা ও সূত্রাপুরে। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে ভাড়া খাটা, উত্যক্ত করা, খুনে সম্পৃক্ত হচ্ছে। পুলিশের নিজস্ব প্রতিবেদন সূত্রে, ঢাকায় গাংচিল বাহিনীর মতো অন্তত ৮০টি বাহিনীর খোঁজ পাওয়া গেছে। যেগুলোর বেশির ভাগ ‘কিশোর গ্যাং’ নামে পরিচিত। নামে কিশোর গ্যাং হলেও এসব বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যের বয়স ১৮ বছরের বেশি। তাঁরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে সহায়তা, ইন্টারনেট সংযোগ, কেবল টিভি (ডিশ) ব্যবসা ও ময়লা–বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, উত্যক্ত করা, যৌন হয়রানি করা, হামলা, মারধরসহ নানা অপরাধে জড়িত।
তিনি বলেন, সারা দেশের ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়ে পুলিশ প্রতিবেদন তৈরি করেছিল ২০২২ সালের শেষ দিকে। এতে বলা হয়েছে, সারাদেশে অন্তত ১৭৩টি কিশোর গ্যাং রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে এদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৭৮০টি। এসব মামলায় আসামি প্রায় ৯০০ জন। রাজধানীতে কিশোর গ্যাং রয়েছে ৬৬টি। চট্টগ্রাম শহরে আছে ৫৭টি। মহানগরের বাইরে ঢাকা বিভাগে রয়েছে ২৪টি গ্যাং। বেশির ভাগ বাহিনীর সদস্য ১০ থেকে ৫০ জন।
ঢাকায় অনুসন্ধান চালিয়েও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের প্রতিবেদনে যে চিত্র উঠে এসেছিল, তার চেয়ে এখন পরিস্থিতি খারাপ। যেমন পুলিশের তালিকার বাইরে ঢাকায় আরও অন্তত ১৪টি কিশোর গ্যাংয়ের খোঁজ পাওয়া গেছে।
চুন্নু বলেন, বাহিনীগুলো শুধু অপরাধই করে না, আধিপত্য বজায় রাখতে পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়। ডিএমপি সূত্র বলছে, ২০২৩ সালে রাজধানীতে যত খুন হয়েছে তার ২৫টির কিশোর গ্যাং সংশ্লিষ্ট। বাহিনীগুলো একদিনে গড়ে ওঠেনি। রাজনীতিবিদদের প্রশ্রয়ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এসব বাহিনী এখন ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। রাজধানীতে, বড় শহরে মানুষের নিরাপদ বসবাসের ক্ষেত্রে বড় হুমকি হয়ে উঠেছে এসব বাহিনী। ঢাকায় ২১ জন কাউন্সিলরের নাম এসেছে যাদের আশ্রয়ে কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে সাধারণ মানুষের বসবাস করা কঠিন। এসব বাহিনী যারা চাঁদাবাজি ও লুটপাট করছে, যারা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে তারা পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে এসব অপরাধ করছে। আমার প্রশ্ন নতুন ভাবে সরকার গঠন করা হয়েছে। যারা এসব অপরাধীদের সহায়তা করছে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।