অভিনেতার চোখমুখে কোনোরকম অসুস্থতার ছাপ নেই! একেবারে খোশমেজাজেই কথা বললেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে রাজনৈতিক প্রসঙ্গও কিন্তু এড়িয়ে গেলেন না। সাফ জানিয়ে দিলেন, লোকসভা ভোটে প্রার্থী তিনি হচ্ছেন না, তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মতোই এবার চব্বিশের লোকসভা ভোটেও মিঠুনকে দেখা যাবে বিজেপির হয়ে প্রচার করতে।
মহাগুরু জানালেন, “আগামী ১ তারিখ থেকে লাগাতার প্রচার শুরু করব। একাধারে বাংলায় প্রচারের পাশাপাশি অন্য কোনো রাজ্যে যদি যেতে হয়, তাহলেও যাব।” শুধু তাই নয়, সন্দশখালিতে শুভেন্দু অধিকারীকে আটকানো প্রসঙ্গে মিঠুনের মন্তব্য, “ও খুব শক্তিশালী নেতা। ওকে আটকে কোনো লাভ নেই। ঠিক বেরিয়ে যাবে।” প্রধানমন্ত্রীর ফোন পেয়েও বেজায় খুশি তিনি। বললেন, “নরেন্দ্র মোদিকে খুব শ্রদ্ধা করি আমি।”
সোমবার হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময়ে পাশেই দেখা গেল ছেলে মিমো ওরফে মহাক্ষয় চক্রবর্তীকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের তারকা সংসদ তথা সহ-অভিনেতা দেবের প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ মিঠুন চক্রবর্তী। হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে টেনে মিঠুন বললেন, “দেব খুব ভালো ছেলে। অত্যন্ত বুদ্ধিমান।” ঠিক যেসময়ে দেবকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, এমতাবস্থাতেই সংসদ অভিনেতাকে ‘গুড বয়’ সার্টিফিকেট মিঠুনের।
শনিবার মেগাস্টারের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিনোদুনিয়া থেকে রাজনৈতিকমহল উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক মতাদর্শ, রং সমস্ত কিছু দূরে সরিয়ে রেখে গত দুদিনে তাকে দেখতে ছুটে গিয়েছেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ ও বিধায়করাও। সেই তালিকায় যেমন দেবশ্রী রায়, দেব, সোহম চক্রবর্তীরা রয়েছেন, তেমনই সুজিত বসুকেও দেখা গিয়েছে উদ্বিগ্ন মুখে হাসপাতাল থেকে বেরোতে। রোববার ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দিল্লিতে অধিবেশন সেরেই রোববার কলকাতায় পা রেখে মিঠুনকে দেখতে গিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাসপাতালে মিঠুনের সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ খোশমেজাজে আড্ডাও দেন। জয়পুর থেকেই শুটিংয়ের ফাঁকে খোঁজ নিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষও। শুধু তাই নয়!
মিঠুনকে দেখতে সোমবার সাত সকালে গেলেন দিলীপ ঘোষও। দ্রুত আরোগ্য কামনা করে মহাগুরুকে হাসপাতালে দেখতে ছুটেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীও। একসময়ে বামপন্থি রমলার হয়েও ভোট প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তীকে। বিগত কয়েক দশক ধরেই তাদের পারিবারিক সখ্য রয়েছে। সেই টানেই মিঠুনের খোঁজ নিতে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন রমলা চক্রবর্তী। একসময়ে তৃণমূলের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের ‘রাজনৈতিক গুরু’ বলেছেন মিঠুন, তবে একুশের বিধানসভা ভোটেই সেই সমীকরণ বদলে যায়। বাম-তৃণমূলের হয়ে প্রচারের পর গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হয়ে থাকুক না কেন, মেগাস্টারই কিন্তু গত দুদিনে এক ছাদের তলায় দেখা গেল দুই বিরোধী শিবিরকে। এটাই মিঠুন ম্যাজিক। নো যাবে না, ‘ও খুব সাহসী ছেলে’ ভেঙে বেরিয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি শোনা যায় মহাগুরু মুখ থেকে।