রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার একমাত্র আসামি পুলিশের বরখাস্ত এএসআই সৌমেন রায় পলাতক আছেন।
সৌমেন রায় (৩৪) মাগুরা সদর উপজেলার আসবা গ্রামের সুনিল রায়ের ছেলে। সবশেষ তিনি খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তারা গ্রামের বাড়ি থাকতেন।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানাযায়, পরকীয়ার জেরে ২০২১ সালের ১৩ জুন বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে কুষ্টিয়ার কাষ্টমমোড় এলাকায় নিজের ২য় স্ত্রী কুমারখালীর নাথুরিয়া বাশগ্রামের বাসিন্দা আমির আলীর মেয়ে আসমা খাতুন (৩৪) এবং আসমার আগের পক্ষের ছেলে রবিন (৭) এবং কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের বাসিন্দা মেজবার খানের ছেলে বিকাশ কর্মী শাকিল খান (২৮)কে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেন পুলিশের এএসআই সৌমেন রায়। ওই সময়ই স্থানীয়দের সহযোগীতায় সৌমেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পরদিন নিহত আসমার মা হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে সৌমেনকে একমাত্র আসামি করে কুষ্টিয়া সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারের পর সৌমেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
কুষ্টিয়া জজ আদালতের পিপি অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী বলেন, এটি সারাদেশের একটি আলোচিত ঘটনা ছিলো। এই মামলার একমাত্র আসামি পুলিশের বরখাস্ত এএসআই সৌমেন রায়ের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। তবে আজতবাস থাকাকালিন উচ্চ আদালত থেকে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর অন্তবর্তীকালীন জামিন নিয়ে বাইরে আসার পর থেকেই সে পলাতক আছে।
প্রসঙ্গত, কুমারখালী থানায় দায়িত্বে থাকার সময় এএসআই সৌমেনের সঙ্গে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে আসমার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে সময় সৌমেন তার নাম মো. সুমন হোসেন রাখেন এবং সুমন নামেই মুসলিম বিধান মতে আসমাকে বিয়ে করেন। সৌমেন আসমার তৃতীয় স্বামী ছিলেন। বিয়ের পর থেকেই কুষ্টিয়ার আড়ুয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় তারা বাস করছিলেন।
এএসআই সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় বদলি হওয়ার পর থেকেই বিকাশকর্মী শাকিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আসমা। এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সৌমেন। আসমার প্রতি ক্ষোভ জমিয়ে রাখেন মনে। সেই ক্ষোভ থেকেই দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেন সৌমেন।
সৌমেন রায় ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে উন্নীত হন। পরে ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগ দেন। সেখান থেকে মিরপুর থানার হালসা ক্যাম্প, বাগেরহাট থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন।