ব্লিঙ্কেন কায়রোতে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কাতারের ক্ষমতাসীন আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানির সঙ্গে আলোচনার জন্য দোহায় পৌঁছান ব্লিঙ্কেন।
বর্তমানে বিবেচনাধীন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতার সহায়তা করেছে। প্রস্তাবটিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এই যুদ্ধে বিরতির সাথে গাজায় হামাসের হাতে বন্দী বাকি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সাংবাদিকদের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বল এখন হামাসের কোর্টে’।
তিনি আরও বলেন, যদিও মিশর ও কাতার হামাসকে একটি শক্তিশালী, জোরালো প্রস্তাব মেনে নিতে চাপ দিয়েছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তো হামাসেরই হাতে।
এর আগে নভেম্বরের শেষের দিকে এক সপ্তাহব্যাপী একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। যাতে গাজা থেকে হামাসের হাতে আটক ১০০ জনেরও বেশি জিম্মি এবং ইসরায়েলের হাতে আটক ২৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ব্লিঙ্কেন সোমবার সৌদি আরবের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে পঞ্চমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রিয়াদে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স এবং প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে বৈঠক নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, কর্মকর্তারা আঞ্চলিক সমন্বয়ের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এটি গাজায় সংকটের স্থায়ী অবসানে, একই সাথে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সংহত ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে তোলার গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে আলোচনায়।
প্রায় চার মাস আগে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা সাড়ে ২৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এর মধ্যে সাড়ে ১১ হাজারই শিশু এবং ৮ হাজারের বেশি নারী।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে যে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৫৮৫ জন নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানে গিয়ে তীব্র পরিস্থিতির মুখে পড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে আহত হয়েছেন শত শত ইসরায়েলি সেনা। এসব সেনাকে ফেরাতে ১৫০০ এর বেশি অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা থেকে আহতদের উদ্ধারে হিমশিম খাচ্ছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন।
শনিবার পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে ২২৪ জনসহ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৫৬১ জন অফিসার ও সেনার মৃত্যুর খবর দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত ২,৮৫১ জন অফিসার ও সেন্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে স্থল অভিযানের সময় আহত হয়েছেন ১,২৯৬ জন।