জাতীয় পার্টির মধ্যে সংশোধন প্রয়োজন জানিয়ে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, ‘আমাদের দলের মধ্যে ব্যাপকভাবে সংশোধন হওয়ার দরকার আছে। আমরা যদি সেটা করতে না পারি, তবে সামনের দিকে দল ভাঙবে না, তবে দলের অস্তিত্ব থাকবে না।’
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন জিএম কাদের। জাতীয় সংসদে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিরোধীদলীয় নেতা, কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধী দলীয় উপনেতা এবং জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ নির্বাচিত হওয়ায় এই সংবর্ধনার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর জাতীয় পার্টি।
জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা অন্য দলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়েছি, সেটা পার্শিয়ালি কারেক্ট। আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমাদের দলের মধ্যে ব্যাপকভাবে সংশোধন হওয়ার দরকার আছে। আমরা যদি সেটা না করতে পারি তবে সামনের দিকে দল ভাঙবে না, তবে দলের অস্তিত্ব থাকবে না। দলকে মানুষ ভালোবাসবে না, দলের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না।
এই মুহূর্তে দল ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেকে বলেছে আমাদের দল ভাগ হয়ে যাবে। দল ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা আমি এই মুহূর্তে এই প্রেক্ষিতে দেখছি না। এরশাদ সাহেবের নাম ও আদর্শ দিয়ে আরও দশটি দল যে কেউ গঠন করতে পারে। কিন্তু আমাদের দল থেকে ভেঙে নিয়ে আরেকটি দল গঠন করার পরিবেশ পরিস্থিতি এই মুহূর্তে দেখছি না। তবে একটা জিনিস আমি বলতে চাই, আমাদের দলের ব্যাপারে মানুষের উপলব্ধি ভালো না।’
দলের নেতাকর্মীদের এক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দলকে টেকাতে হলে সবাইকে একলাইনে থাকতে হবে। আমরা যদি ব্যর্থ হই তবে দল মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা ভাঙন নিয়ে চিন্তিত নই। কিন্তু আমাদের নিজেদের মধ্যে যে ত্রুটি আছে সেগুলো সারিয়ে তুলতে হবে।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬টি আসন সমঝোতা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ বিভ্রান্তিকর একটি স্টেটমেন্ট দিয়েছে। তারা বলেছে আওয়ামী লীগের ২৬টা সিট ছেড়ে দিলাম জাতীয় পার্টির ফেভারে। কিন্তু তারা সেসব ছাড়ে নাই, সব জায়গায় তাদের লোক দিয়ে রেখেছে। আমাদের অনেক প্রার্থী বিভ্রান্ত হয়েছে। অনেকে এটাকে মহাজোট বলেছেন, আবার অনেকে এটাকে সিট ভাগাভাগির কথা বলেছেন। আমি প্রথম দিন থেকে বলেছি, এটা মহাজোট হয়নি। সিট ভাগাভাগিও হয়নি। এটা বিভ্রান্তিকর, আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু। উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তৈয়বুর রহমান, সদস্য সচিব মো. সুলতান আহমেদ সেলিম।