বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেছেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলার বল্লামুখ গ্রামের অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু, পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার রবিউল ইসলাম রুবেল ও ষষ্ঠীতলাপাড়া বাদল দাসের বাড়ির ভাড়াটিয়া মিহির কুমার সাহা।
এসআই মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত বছরের ২৫ মে রাতের বেলায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে এক তরুণীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চারজন মিলে গণধর্ষণ করে। এই ঘটনার মামলায় চারজনই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। একজনের জামিন হলেও অন্য তিনজন এখনও জেলহাজতেই রয়েছেন।
মামলাটি প্রথমে আবুল হোসেন নামে এক আইনজীবী আসামিদের পক্ষে কাজ করছিলেন। পরবর্তীতে মামলাটি হাতে নেওয়ার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। কিন্তু তিনিও শেষ পর্যন্ত মামলাটি হাতে নিতে পারেননি। বর্তমানে মামলাটিতে আসামিদের পক্ষে কাজ করছেন অ্যাডভোকেট চিত্ত রঞ্জন।
আদালতের বিচারককে উদ্দেশ্য করে ওই দোকানের কর্মচারী মিহির কুমার সাহা একটি চিঠি কম্পোজ করে দেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি জামিন শুনানির ধার্য তারিখ। ওইদিনে আসামিদের জামিন দেবেন। অন্যথায় আপনার জীবন শেষ করে দেওয়া হবে এবং আপনার ওই অবস্থা হবে। এই চিঠি পেয়ে বিষয়টি যশোর আদালত পাড়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
তবে এই ঘটনাটি ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলামকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দায়িত্ব দেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তদন্তকালে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গত বুধবার গভীর রাতে যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার বাসা থেকে প্রথমেই রবিউল ইসলাম রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিহির কুমার সাহাকে। এরপরে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডকে। এদিনই থানায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গণধর্ষণ মামলাটির আইনজীবী নিযুক্ত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। দ্বিতীয় দফায় আইনজীবী পরিবর্তন করতে গিয়ে না পেয়ে ২৭ জানুয়ারি মিহির কুমারকে দিয়ে কম্পোজ করে রুবেলের মাধ্যমে যশোর পোস্ট অফিস থেকে ডাকযোগে আদালতে পাঠাতে বলা হয়।
রুবেল পোস্ট অফিসে গেলে অ্যাডভোকেট নব কুমারের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেন। তাই ঘটনার সূত্র ধরেই ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেছেন, বিষয়টি তারা জেনেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।