নামে মিল থাকায় বিনা দোষে গত দেড় বছর ধরে চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন টেকনাফের হাছিনা বেগম (৪০)। মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি একই এলাকার হাসিনা আক্তারের বদলে আটক করে পুলিশ আদালতে চালান করেন ভুক্তভোগী হাছিনা বেগমকে। এরপর থেকেই স্বামী-সন্তান ছেড়ে বিনা দোষে জেল খাটছেন তিনি। জানা গেছে, কারাগারে থাকা হাছিনা বেগম কক্সবাজার জেলার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়া এলাকার হোসেন বর বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী। আর সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার একই এলাকার ইসমাইল হাজী বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী। ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ইয়াবাসহ আটক হওয়ার ঘটনায় হাসিনা আক্তারের কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছিল। তবে নামের একাংশের সঙ্গে মিল থাকায় তার জায়গায় প্রায় দেড় বছর ধরে সেই সাজা খাটছেন হামিদ হোসেনের স্ত্রী হাছিনা বেগম।
এই চাঞ্চল্যকর বিষয়টি রোববার (২রা মে) আইনজীবী এডভোকেট গোলাম মওলা মুরাদ চট্টগ্রাম ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালতের নজরে আনেন। পরে আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে আজ ৪ঠা মে’র মধ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা রেজিস্ট্রারে মূল আসামির সঙ্গে সাজাভোগকারীর ছবি মিল-অমিল তুলে ধরে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের পর মামলা দায়ের হয়।
হাছিনা বেগমের ছেলে শামীম নেওয়াজ জানান, তার মাকে থানায় একটি সাইন দিতে হবে বলে পুলিশ ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ইয়াবার মামলায় জেলে পাঠানো হয়। তার মায়ের নামে কখনো কোনো মামলা বা জিডি ছিল না। আর জেলে যাওয়ার পর তার বাবাও তাদের ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানান ভুক্তভোগী এই নারীর ১৫ বছর বয়সী ছেলে।
এদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, কারা রেজিস্ট্রারে থাকা দুজনের ছবির মিল নেই। মূল আসামি হাসিনা আক্তারের এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল কারাগারে থাকার সময়। এই বিষয়ে হাছিনা বেগমের মুক্তি চেয়ে আবেদন করা এডভোকেট গোলাম মওলা মুরাদ জানান, কারাগারে থাকা হাছিনা বেগমের অপরাধীর তালিকায় নাম নেই। অতীতে অপরাধের সঙ্গেও ছিল না কোনো সম্পৃক্ততা। তবুও তিনি খাটছেন জেল। অপরাধ একটাই, সাজাপ্রাপ্ত আসামির নামের প্রথম অংশ ও স্বামীর নামের একাংশের সঙ্গে মিল রয়েছে। তবে অপরাধীর নামের সঙ্গে মিল থাকলেও বাবা-মায়ের নামের সঙ্গে রয়েছে অমিল।