পাপুয়া নিউ গিনির দুটি শহরে দাঙ্গা ও লুটপাটের ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এই দাঙ্গা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করেছে দেশটির প্রশাসন।
এর আগে বুধবার (১০ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী পোর্ট মোরেসবিতে শত শত পুলিশ কর্মকর্তা, সৈন্য, কারাকর্মী ও সরকারি কর্মচারীরা বেতন বিরোধের প্রতিবাদে তাদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর এই দাঙ্গা শুরু হয়। যদিও দেশটির পাপুয়া নিউ গিনি সরকার বেতন কমানোর জন্য প্রশাসনিক ত্রুটিকে দায়ী করেছে।
বৃহস্পতিবার আরও ১৮০ জন প্রতিরক্ষাকর্মী পোর্ট মোরেসবি থেকে পালিয়ে যান। উচ্চ বেকারত্ব ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে দেশটিতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে বলেছেন, পোর্ট মোরেসবি ‘চাপ ও অস্থিরতার মধ্যে’ ছিল, তবে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মারাপে বলেন, ‘গতকাল শহরে পুলিশ কাজ না করায় মানুষ অরাজকতা শুরু করে। তবে সবাই নয়, আমাদের শহরের কিছু অংশের লোকজন। আজ সকাল পর্যন্ত যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, শহরে উত্তেজনা কমেছে।’
ব্যবসায়ীরা ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশ মেরামত করার কারণে বৃহস্পতিবার অনেক দোকানপাট ও ব্যাংকিং সেবা বন্ধ ছিল।
পাপুয়া নিউ গিনি একটি বৈচিত্র্যময়, উন্নয়নশীল দেশ। এখানে বেশিরভাগ জীবিকা নির্বাহকারী কৃষক। দেশটিতে প্রায় ৮০০টি ভাষায় কথা বলা হয়। এটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশে অবস্থিত। ১ কোটি মানুষ নিয়ে এটি অস্ট্রেলিয়ার পরে সবচেয়ে জনবহুল দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ। অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা ২ কোটি ৬০ লাখ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তার সরকার তার নিকটতম প্রতিবেশীর কাছ থেকে সাহায্যের জন্য কোনো অনুরোধ পায়নি।
গত মাসে পাপুয়া নিউ গিনি ও অস্ট্রেলিয়া একটি দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি সই করেছে।
আলবানিজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পোর্ট মোরেসবিতে কী ঘটছে সেখানকার আমাদের হাইকমিশন তার উপর খুব নিবিড় নজর রাখছে এবং অস্ট্রেলিয়ানরা পর্যবেক্ষণে আছে।’
পাপুয়া নিউ গিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান উপজাতীয় সহিংসতা এবং নাগরিক অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে এবং এর পুলিশের সংখ্যা ৬ হাজার কর্মকর্তা থেকে বাড়িয়ে ২৬ হাজার করার দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য রয়েছে। সূত্র: বিবিসি