মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন মুদ্রানীতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এজন্য টাকার সরবরাহ কমানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। আর টাকার যোগান কমাতে ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি করা হবে। এজন্য ট্রেজারি বন্ড বিলের সুদ হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সুদের হার বাড়লে ঋণ কমবে। এতে বিনিয়োগে টান পড়বে। অপরদিকে উৎপাদন বাড়াতে কৃষি, সিএমএসএমই ও অর্থায়ন স্কিমের সুদের হার বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা থাকছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতির নেপথ্য ডলার সংকট গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করেন ডলারের রেট বাজারভিত্তিক করতে ক্রলিং পেগ (নিয়ন্ত্রিত হলে পরিবর্তনশীল) নতুন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। রেমিট্যান্স বাড়াতে উদ্যোগ থাকছে। পাশাপাশি পণ্যের মূল্য কমাতে মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাব করান হয়েছে। যা আগামী ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদন হতে যাচ্ছে। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আগামী ১৫ জানুয়ারি মনিটরি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস) ঘোষণা করতে পারেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, মুদ্রানীতির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে নতুন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন বছরের প্রথম ৬ মাসের মুদ্রানীতিতেও নীতি সুদের হার আরও বাড়িয়ে টাকার অবমূল্যায়ন কমানো হবে। এতে সুদহার বেড়ে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। আর বাকি নীতি চলবে আগের মতোই।
মুদ্রানীতি চূড়ান্ত করার আগে আগামী শনিবার মুদ্রানীতি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। নতুন মুদ্রানীতি কমিটিতে গভর্নর, অর্থনীতিবিদ সাদিক আহমেদ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমীন রয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্য ছিল ‘গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনা। আর আগামী জুনের মধ্যে সেটি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ছিল। যদিও গত নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ হয়। এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান কাজ। এজন্য ঋণের সুদহার কিছুটা বাজারভিত্তিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতি সুদের হারও বাড়ানো হয়েছে। ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ করা হয়েছে।