এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম-১ আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা আগামীকাল শপথ গ্রহণ করব না। ২-৩ দিনের মধ্যে দলীয় বৈঠক করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আসলে আমরা আদৌ শপথ নেব কি না, সেটা জানি না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটে নির্বাচিত নতুন সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
শপথ গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এলাকায় আছি। আজকে ঢাকায় আসছি। এরপর দলের বৈঠক হবে। তখন বলতে পারব আমরা কী করব। দলের সঙ্গে বৈঠক না করে কিছু বলতে পারব না।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ফলে জাপাকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়ে সেসব আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ১৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা। দলটির মাত্র ১১ প্রার্থী জয়ী হতে পেরেছেন।
হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, যিনি ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তাকে ছাড় দিয়ে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তারপরও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে হেরে যান শেরিফা কাদের।
বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী জাপার জয়লাভ করা প্রার্থীরা হচ্ছেন— দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের (রংপুর-৩), মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্চ-৩), কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২)। তাদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদার ও আশরাফুজ্জামান ছাড়া বাকিরা বর্তমান সংসদে এমপি হিসেবে আছেন।
জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন– সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, পনির উদ্দিন আহমেদ, আহসান আদেলুর রহমান, রানা মোহাম্মদ সোহেল, শরিফুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, নাসরিন জাহান, নুরুল ইসলাম তালুকদার। এর বাইরে রওশন এরশাদ ও সাদ এরশাদ নির্বাচনে অংশ নেননি। আর দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।