সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী নেতাকর্মীদের হত্যা, গ্রেফতারসহ নানা অভিযোগ তুলে জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে গত দুই মেয়াদের মতো সরকার এবারও একতরফা সংসদ নির্বাচন করতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে দলটি।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘একতরফা’ উল্লেখ করে এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিংঘের মহাসচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির পক্ষে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে চিঠিটি পাঠানো হয়। দলটি জানিয়েছে, রোববার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে চিঠি পৌঁছে দিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে দলটি ঢাকায় জাতিসংঘসহ বিদেশি সব মিশনে ওই চিঠি দিয়েছে।
বিএনপি তাদের চিঠিতে অভিযোগ করেছে, গত দুই মাস রাষ্ট্রযন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বাস–ট্রেনে হামলা, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের নাশকতা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশকে ব্যবহার করে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব ঘটনায় বানোয়াট অভিযোগ এনে বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করে সরকার প্রহসনের নির্বাচন করতে চাইছে।
এমন অভিযোগের ব্যাপারে যুক্তি দিতে গিয়ে বিএনপি বলেছে, ‘চলমান অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার একমাত্র উপকারভোগী আওয়ামী লীগ ও তার অধীনস্থ রাষ্ট্রযন্ত্র। আর প্রধান ভুক্তভোগী বিএনপি।’
বিএনপি অভিযোগ করেছে, ‘বিতর্কিত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের দুটি নির্বাচনের মতো সরকার আবারও সহিংসতা ও কারচুপির প্রহসনের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোট ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করছে। এসব দল তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
গত ২৮ অক্টোবর সংঘাতের কারণে ঢাকায় সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে বিএনপি ও তাদের আন্দোলনের মিত্ররা একের পর এক হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। এখন তারা নির্বাচন বর্জন ও সরকারকে অসহযোগিতার আন্দোলনে জনমত গঠনে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগের কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক মিত্ররা এখন ভোটের মাঠে প্রচারণায় রয়েছে। এমন পটভূমিতে নির্বাচন, সরকারের গ্রেফতার অভিযান ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বরাবর চিঠি দিল বিএনপি।
চিঠিতে দলটি ২৮ অক্টোবরের পর থেকে তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছে। বিএনপির পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে ২৭ জনকে।