দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল কে হবে সে বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে একই কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তারা বলেছেন, শুধু কি আওয়ামী লীগের লোকজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী? আমরা আমাদের জবাব দিয়েছি। তারা সেটা শুনেছেন। তারা বলার চেয়ে শুনতে আগ্রহী ছিলেন বেশি।
বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের মনোভাব কেমন ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের বক্তব্য শুনেছেন। আলোচনায় বাংলাদেশের বাস্তবতায় এ নির্বাচনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি এসেছে। নির্বাচনে ২৭টির মতো দল অংশগ্রহণ করেছে, ১৮৯৬ জন প্রতিযোগিতা করছেন। এসব বিষয় তারা পজিটিভলি নিয়েছেন। তারা একটা বিষয় জানতে চেয়েছেন, বিরোধী দল কে হবে? তারা আসলে বলার চেয়ে আমাদের কথা বেশি শুনতে আগ্রহ ছিলেন। মন্তব্যের ব্যাপারটা তারা ওইভাবে করতে চাননি। আমরা আমাদের বক্তব্য বলেছি। নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি, বিএনপি আসল না কেন, এ রকম অনেক বিষয় আলোচনায় ছিল।
বিরোধীদল কে হবে সে প্রসঙ্গে আপনারা কী বলেছেন, এমন প্রশ্নের জবাব সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের ফলাফলে বলে দেবে বিরোধী দল কে হবে।
তিনি বলেন, আমরা একটা কথা বলেছি যে, নির্বাচনের টার্ন-আউট সন্তোষজনক হবে। এ নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ আছে। সারা বাংলাদেশের ভোটারদের মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে টার্ন-আউট নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্নের কোনো কারণ নেই। পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন করা একটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। তারা ভায়োলেন্সের বিষয়ে কথা বলছেন। আমরা বলেছি, বিএনপি ভায়োলেন্স করছে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে তারা ভায়োলেন্স করতে চাচ্ছে। রিমোট কন্ট্রোল লিডারের বাস্তবতার সঙ্গে আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশের নির্বাচনের চেয়ে ইউক্রেন, গাজা, ইসরাইল, ফিলিস্তিনি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাথা ব্যথা দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের এখন মাথা ব্যথা ইউক্রেন নিয়ে, মাথা ব্যথাটা গাজা, ইসরাইল, ফিলিস্তিনি নিয়ে। এসব প্রসঙ্গ বিশ্ব রাজনীতিতে এখন প্রকট। তারা বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন ওসব নিয়ে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কেমন হবে, কতটুকু সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য হবে, এ ব্যাপারে সরকারের এবং আওয়ামী লীগের যে প্রস্তুতি তা নিয়ে কথা হয়েছে। স্বতন্ত্রের বিষয় আলোচনা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছেন, স্বতন্ত্ররা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নাকি অন্য দলের রয়েছেন। আমরা বলেছি বাইরের লোকও স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। অনেকে বিএনপি থেকে এসেও স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে। বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ তবে সব স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগের নন।
তিনি বলেন, ইইউ প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছে, নির্বাচনের ফলাফল, এটা কি সবাই মেনে নেবে? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা প্রস্তুত, নির্বাচন বিরোধীদের অবস্থা কী, তারা মেজর কোনো প্রবলেম করতে পারে কি না। এসব বিষয়ে জবাব আমরা আমাদের মতো দিয়েছি।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।