করোনার নতুন ধরন জেএন ডট ওয়ানের প্রভাবে সম্প্রতি ভারতে করোনা সংক্রমণে ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। গত কয়েক দিনে যত রোগী করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের অনেকের নমুনাতেই সন্ধান মিলেছে এ ধরনটির।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় আক্রান্ত রোগীদের হার সবচেয়ে বেশি।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগের দিন বুধবার কেরালায় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩০০ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। বর্তমানে ভারতজুড়ে করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ২ হাজার ৬৬৯ জনে।
করোনা মহামারি প্রতিরোধে গঠিত ভারতের রাষ্ট্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন কোভিড টাস্ক ফোর্সের কো চেয়ারম্যান ডা. রাজীব জয়দেভান ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, কেরালার কোচি অঞ্চলে গত কয়েক দিনে জ্বর ও ঠান্ডাজনিত নানা উপসর্গের কারণে যারা হাসপাতালে এসেছেন, তাদের ৩০ শতাংশই শনাক্ত হয়েছেন করোনা পজিটিভ হিসেবে।
কেরালার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শ্রীজিৎ এন কুমার অবশ্য সংক্রমণের সাম্প্রতিক এই উল্লম্ফণকে তেমন অস্বাভাবিক মনে করছেন না। এনডিটিভিকে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘অন্যান্য ছোঁয়াচে রোগের মতো করোনাকেও সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব নয়। এটি শ্বাসতন্ত্রের একটি রোগ এবং শীতের সময় স্বাভাবিকভাবেই এর প্রকোপ বাড়ছে।’
‘অর্থাৎ, মহামারির শুরুর দিকে কোভিড যে ভয়াবহ চেহারা নিয়ে এসেছিল, এখন আর তা নেই। এটা এখন সর্দিজ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জার একটি ধরনে পরিণত হয়েছে।’
আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে জানা গেছে, জেএন ডট ওয়ান নামে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন কেরালার সাম্প্রতিক সংক্রমণ পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডা. মানসুখ মাণ্ডব্য বুধবার উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক আহ্বান করেছিলেন। সেই বৈঠকে কেরালার করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানকার রাজ্য সরকারকে কেন্দ্র থেকে যাবতীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি, পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যকেও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
জেএন ডট ১ মূলত করোনার অমিক্রণ ভ্যারিয়েন্টের একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট। জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এই ধরনটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ ক্যাটাগরিভুক্ত করেছে। পাশাপশি এক বিবৃতিতে বৈশ্বিক এই সংস্থাটি বলেছে, ‘জেএন ডট ১ সম্পর্কে এখনও খুব বেশি তথ্য জানা যায়নি। সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে এই ভাইরাসটির বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’