ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিদের নিক্ষেপ করা ১৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য। লোহিত সাগরের ওপর ব্রিটিশ ও মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো এসব ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে।
এই ঘটনায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সংঘাত আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আরও প্রকট হয়েছে। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ও ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজগুলো লোহিত সাগরের ওপর ১৫টি আক্রমণাত্মক ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) শনিবার বলেছে, লোহিত সাগরের ওপর ‘ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল’ থেকে নিক্ষেপ করা বেশ কিছু ড্রোনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং হামলা চালাতে আসা ১৪টি সন্দেহভাজন ড্রোনকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
এসব উৎক্ষেপণকে ‘একমুখী আক্রমণকারী ড্রোন’ হিসাবে বর্ণনা করে তারা বলেছে, ‘ওই এলাকায় জাহাজের কোনও ক্ষতি বা কারও আহত হওয়ার খবর ছাড়াই সেসব ড্রোনকে গুলি করে নামানো হয়েছিল’।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস বলেছেন, ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি ডেস্ট্রয়ার এইচএমএস ডায়মন্ড একটি সি ভাইপার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং বাণিজ্যিক একটি জাহাজকে হামলা চালাতে আসা ড্রোন ধ্বংস করে দিয়েছে’।
এদিকে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠী বলেছে, তারা শনিবার এক ঝাঁক ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলের ইলাত শহরে আক্রমণ করেছে। হুথি গোষ্ঠীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া ইসরায়েলের লোহিত সাগরের তীরবর্তী এই শহরটিকে ‘অধিকৃত দক্ষিণ ফিলিস্তিন’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
একইসঙ্গে হুথিরা লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর তাদের হামলা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
মূলত টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল এবং তাদের এই বর্বর হামলার মধ্যেই ইরান-সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি হুঁশিয়ারি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এর আগে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দেয় হুথি গোষ্ঠী। একইসঙ্গে ইসরায়েলি বন্দরগুলোতে যাওয়া এবং সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করে দেয় গোষ্ঠীটি।
এছাড়া চলতি মাসেই ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহীরা।
এমনকি হুথিরা লোহিত সাগর এবং ওই সাগরের বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি-সংযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজ আক্রমণ চালানোর পাশাপশি জব্দও করেছে। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে থাকে।
এছাড়া হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোন নিক্ষেপও করেছে হুথি বিদ্রোহীরা।