আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট থেকে গত ৪ ডিসেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের (বিটিএফ) চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডির ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘সেদিনই (৪ ডিসেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে শরিকদের বৈঠকে) ৫/৬টার কথা বলা হয়েছে। আমরা জানি, আমরা আছি। আমি জানি আমারটা আছে। আমাকে ৪ ডিসেম্বরই আসন বলে দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘৪ ডিসেম্বর আমরা গণভবনে যাই। সেখানে আলোচনা হয়েছে, আমি বক্তব্য রেখেছিলাম। সেদিন ওবায়দুল কাদের সাহেব প্রকাশ্যে কয়েকজনের নাম বলে দিয়েছিলেন। বাকিগুলো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম-২ আসনে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিন মাস আগে নিবন্ধন পেয়ে যদি কেউ মনোনয়ন পায়, তাহলে রাজনীতির অবস্থান কোথায় যাবে? সুপ্রিম পার্টি তো জোটে নেই।’
নজিবুল বশর বলেন, ‘তাদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড কি? ক্যারিয়ার কি? হঠাৎ কেউ আসলো, দু-চারটা প্রোগ্রাম করল, বলে দিলেন আছে! এটা দেশের জন্য আগামী রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভালো না। বিএনপি জামায়াত রাজনীতির বাইরে। তারা সন্ত্রাসসহ আন্দোলন করে যাচ্ছে। বহির্বিশ্ব চুপচাপ। চুপচাপটা ভালো লক্ষণ না।’
লিখিত বক্তব্যে তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে, বিএনপি-জামায়াত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রুখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তাই তার নেতৃত্বে, ১৪ দলীয় জোট এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে, বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করব ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ ও সভাপতিত্বে গণভবনে ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমরা সে সিদ্ধান্তের ওপর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন অবিচল রয়েছি। মহান আল্লাহর রহমত ও জনগণের ভোটে, বঙ্গবন্ধুকন্যা আবারও নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হবেন। এ ব্যাপারে যেমন কোনো ভুল নেই, তেমনি বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জনত্রেী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, ১৪ দলীয় জোটের অংশ হিসেবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবে এটিও নিশ্চিত। ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের চাওয়া-পাওয়া ও আশা-প্রত্যাশা অনেক থাকতেই পারে। আমরা সম্মানজনকভাবে মূল্যায়িত হবো বলে বিশ্বাসী। শেখ হাসিনা নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন প্রস্তুত।
রেজাউল হক বলেন, বর্তমানে বিএনপি-জামায়াত, নির্বাচন প্রতিহত ও বানচাল করার অপচেষ্টা করে দেশব্যাপী আগুন সন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে হত্যাসহ অতি সম্প্রতি রেল লাইন উপড়ে ফেলাসহ নাশকতা করে যাচ্ছে, তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দলীয় ও স্বতন্ত্র হিসেবে যারাই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে, তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সৈয়দ আবু দাউদ মছনবী হায়দার, যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মুহাম্মদ আলী ফারুকী, যুগ্ম মহাসচিব ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ আলী হোসাইন, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব ইসলাম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম মিয়াজী, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া, যুগ্ম স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা কামরুল আহসান ও হারিস মিয়া নিরব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।