দেশে বিধিনিষেধ চলাকালে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে লালমাটিয়ার ‘মেহমানখানা’। রমজানের শুরু থেকেই মেহমানখানায় হাজারেরও বেশি মানুষের ইফতারের আয়োজন করে এটি। রাজধানীর লালমাটিয়া ডি ব্লকেই এলাকার বাসিন্দাদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে মেহমানখানা। প্রতিদিন হাজারো নিম্ন আয়ের বাসিন্দা এখানে ইফতার করতে আসেন।
লালমাটিয়ার ডি ব্লকের সড়কের এ মেহমানখানায় বিকেল তিনটার পর থেকেই শুরু হয় ইফতার তৈরির কর্মযজ্ঞ। ইফতারের যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করেন এলাকার বাসিন্দারা। ইফতার তৈরি ও রান্নার কাজে হাত লাগান এলাকার তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সীরা। ইফতারের জন্য তৈরি হয়, লেবুর শরবত, ছোলা, পেঁয়াজু ও বেগুনি। ইফতার তৈরি শেষ হলেই তা পরিবেশনের জন্য আলাদা আলাদা প্লেট এবং ব্যাগে রাখা হয়।
মেহমানখানার উদ্যোক্তাদের কাছে জানা যায়, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় হাজার মানুষের একত্রে ইফতার আয়োজন সম্ভব হয়েছে। ইফতারে রাখা হয় চিড়া, মুড়ি, বুট, খেজুর ও জিলাপি। শুক্রবার স্পেশালি রাখা হয় মাংসের খিচুড়ি। গত বছর লালমাটিয়ার এ মেহমানখানার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। প্রতিদিন ইফতার আয়োজনে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
তারা বলেন, অনেক সময় দোকান থেকে বাকি নিয়েও চালিয়ে নেওয়া হয় মেহমানখানার কার্যক্রম। শেষ সময়ে লোক সমাগম বেশি হলে বেড়ে যায় খরচ। বিকাশে পাওয়া এবং সরাসরি অনুদানের মাধ্যমেই মেহমানখানার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মেহমানখানা কোনো পেশাদার সংগঠন নয়। শুধু এই মহামারির সময়ে মানুষের পাশে থাকতেই এ আয়োজন।
লালমাটিয়ার এই মেহমানখানায় মেহমান হয়ে বিকেল পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যেই ভিড় জমান নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে পথচারী। তবে রিকশাচালকদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে ইফতার আয়োজনে যোগ দিতে লালমাটিয়ার আশপাশের এলাকা বিশেষ করে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, ঝিগাতলা ও ফার্মগেট এলাকার রিকশাচালকরা আসতে থাকেন সারিবদ্ধভাবে। এখানে হাজার মানুষ সমবেত হলেও নেই কোনো হৈ-হুল্লোড়, সেচ্ছাসেবীরাই সবার হাতে ইফতার পৌঁছে দেন। অনেক পথচারী আবার লাইনে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করেন।
এ আয়োজনে সবার মাঝে ইফতার পৌঁছে দিতে স্বেচ্ছাসেবীদের আন্তরিকতার অভাব নেই। তবে, মেহমানখানা কোনো পেশাদার সংগঠন নয় বলে, রমজানের পর এর কার্যক্রম সংকুচিত করে শুধুমাত্র সপ্তাহে একদিন খাবার বিতরণ কার্যক্রম চালু রাখার কথা জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।