বিদেশ ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে খোলা রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) হিসাবে জমার ওপর এখন থেকে ৭ শতাংশের বেশি সুদ দেবে ব্যাংক। এ ছাড়া এ ধরনের হিসাব থেকে দেশের বাইরে অর্থ পাঠানো, একাধিক কার্ড ইস্যুসহ বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যাবে।
দেশের ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে, আরএফসিডি হিসাবে একজন ১০ হাজার ডলার জমা রাখতে পারেন। এখন থেকে এ জমার ওপর ব্যাংকগুলো বেঞ্চমার্ক রেটের সঙ্গে আরও অন্তত দেড় শতাংশ সুদ দেবে। এই হিসাবে জমার বিপরীতে দুটি সাপ্লিমেন্টারি কার্ড ইস্যু করা যাবে। সন্তান বা ভাইবোনসহ তাঁর ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি সেই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্ট থেকে দেশের বাইরে শিক্ষার খরচ পাঠানো যাবে। আবার নিজের ওপর নির্ভরশীল তথা– স্ত্রী বা স্বামী, সন্তান, ভাইবোন, পিতামাতার চিকিৎসার খরচও এখান থেকে বহন করা যাবে।
বেঞ্চমার্ক রেট বলতে এসওএফআর, লাইবর, ইউরিবরের মতো রেফারেন্স রেট বা সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রার সুদহারের আদর্শ নির্দেশককে বোঝানো হয়। এর মাধ্যমে সেখানকার আমানত, ঋণ, আন্তঃব্যাংক লেনদেনে সুদহার কেমন তার একটি ধারণা পাওয়া যায়। বর্তমানে ডলার, ইউরোসহ অনেক মুদ্রার বেঞ্চমার্ক সুদহার সাড়ে ৫ শতাংশের বেশি। এর মানে, এ ধরনের জমার ওপর ৭ শতাংশের বেশি সুদ পাওয়া যাবে।
চলমান সংকট কাটাতে বেশি সুদে ডলার আনতে গত বুধবার অপর এক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশির পাঠানো রেমিট্যান্সের সুবিধাভোগীর নামেও বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সুবিধাভোগীর নামে খোলা অ্যাকাউন্টে তিন মাস থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে অর্থ রেখে ৭ থেকে ৯ শতাংশের বেশি সুদ পাওয়া যাবে; অন্যান্য দেশের তুলনায় যা বেশি। প্রবাসীর সুবিধাভোগী ছাড়া অন্য যারা বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারেন, তারাও এ হারে সুদ পাবেন। দেশের বাইরে ধরে রাখা ডলার আনতে ওই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত যারা দেশের বাইরে বেশি যান কিংবা যাদের ছেলেমেয়ে বাইরে পড়ালেখা করেন, তারাই বাজার থেকে নগদ ডলার কিনে ঘরে রেখে থাকতে পারেন। এখন অনেকেই ডলার কিনে ধরে রাখায় বাজারে নগদ ডলারের চরম সংকট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ঘরে রাখা ডলার ব্যাংকে আনতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেউ যে কোনো প্রয়োজনে দেশের বাইরে গিয়ে ফেরার পর আরএফসিডি হিসাব খুলে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত জমা রাখতে পারেন। কেউ হয়তো যাওয়ার সময় ৫০০ ডলার সঙ্গে নিয়েছিলেন। ফেরার পর ১০ হাজার ডলার দিয়ে অ্যাকাউন্ট করলেও কোনো প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে না। মূলত মানুষের হাতে থাকা ডলার ব্যাংকে আনতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।