নির্বাচনে কারচুপি ও গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত করায় আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে ও উগান্ডায় ভিসা নিষেধাজ্ঞারোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দুই দেশে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সোমবার উগান্ডার কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রসারিত করেছে। বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তারা বিশ্বাস করে যে উগান্ডায় গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোকে দমন করার জন্য এসব ব্যক্তিরা দায়ী। পাশাপাশি জিম্বাবুয়ের কর্মকর্তাদের জন্য নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘জিম্বাবুয়েতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করায় আজ আমি নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির আওতায়—যারা জিম্বাবুয়ের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা অভিযুক্ত তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২ (এ) (৩) (সি) অনুসারে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে—নির্বাচনে কারচুপি, ভোটারদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা বা ব্যক্তিকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখা; গণতন্ত্র, শাসন বা মানবাধিকার সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নাগরিক সমাজের সংস্থাগুলো ক্ষমতা সীমিত করা। ভোটার, নির্বাচন পর্যবেক্ষক বা নাগরিক সমাজকে হুমকি বা শারীরিক সহিংসতার মাধ্যমে ভয় দেখানো।’
ব্লিংকেন আরও বলেন, ‘নির্বাচনী মামলার বিচারের সময় বিচার বিভাগের স্বাধীন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করা বা জিম্বাবুয়েতে মানবাধিকারের অপব্যবহার বা লঙ্ঘনে জড়িত ব্যক্তিরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন।’
উগান্ডা প্রসঙ্গে পৃথক এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশটির গণতন্ত্রকে দমন ও ক্ষুণ্ন করায় ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্লিংকেন বলেন, ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে একটি ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি উগান্ডার বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তাদের বা অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভিসা নীতির সম্প্রসারণ ঘোষণা করছি। যারা উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য বা প্রান্তিক সদস্যদের দমন করার লক্ষ্যে নীতি বা কর্মের জন্য দায়ী বা জড়িত তারাই এর লক্ষ্য।
জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া আগস্টে একটি বিতর্কিত ভোটে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করেন। নির্বাচনকে বিশাল জালিয়াতি বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। নির্বাচনের সমালোচনা করেছেন পর্যবেক্ষকরাও। তারা বলছে, নির্বাচন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।