নারী ফুটবল দলে সিরাত জাহান স্বপ্না ছিলেন স্ট্রাইকার, সেই আক্রমণভাগে সেরা একাদশে খেলার সুযোগ পাওয়া কঠিন ছিল। স্বপ্না না থাকলেও আছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তহুরা খাতুনের শারীরিক গঠনও খুব ভালো না। উচ্চতায় অনেক পিছিয়ে। শরীরটা একেবারেই ছিপছিপে। এমন শরীর নিয়ে আক্রমণভাগে লড়াই করা কঠিন, আর সেটা যদি হয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ। প্রতিপক্ষের রক্ষণের পাহারাদাররা কতটা শক্তিশালী হবেন, তা বলা কঠিন। তহুরার মতো ফুটবলার এত প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়াই করছেন। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছেন কাল। ১০ নম্বর জার্সি পেয়েছেন তহুরা।
খেলা শেষে কাল সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তহুরা। সঙ্গে ছিলেন কোচ সাইফুল বারী টিটু। হ্যাটট্রিক করতে না পারা তহুরা কোনো আক্ষেপ প্রকাশ করেননি। টিটুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন তহুরাকে হ্যাটট্রিক করতে দেওয়া হলো না। টিটু বললেন, ‘অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। সেটা নিতে পারেনি।’ এসব নিয়ে কোনো কথা জবাব দেননি তহুরা।
ময়মনসিংহের কলসিন্ধুরের মেয়ে তহুরা। নারী ফুটবলের বর্তমান দলে সেই শুরু থেকেই আছেন। কাল কমলাপুর মাঠে ফিফা প্রীতি ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৪৮ গোল করলেন তহুরা। অথচ এই তহুরা নাকি ফুটবলই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন।
কাল যখন সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তখন নিজের মুখেই বলে ফেললেন তহুরা, ‘মাঝখানে খারাপ সময় পার করেছি। যে কোনো কারণে অনেক দিন অসুস্থ ছিলাম। কোচ লিটু স্যারকে বলেছিলাম ফুটবল খেলব না। আমি আর পারছি না। উনি বললেন হতাশ না হয়ে চেষ্টা কর। তুই পারবি। লিটু স্যারই আমাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট করলেন।’ কিন্তু কেন তহুরা ফুটবল ছাড়তে চেয়েছিলেন। খাওয়া-দাওয়া সমস্যা। শরীরও সেভাবে কাজ করছিল না। বলতে গেলে ছিটকেই গিয়েছিলাম।’ শরীরও চলছিল না মানে তহুরা আলসারে ভুগছিলেন। পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তহুরা জাতীয় দলকে মাতিয়ে দিলেন।